ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

আত্মগোপনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ তিন জাহিদ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪
আত্মগোপনে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ তিন জাহিদ বাঁ থেকে জাহিদ মালেক (মানিকগঞ্জ ৩), দেওয়ান জাহিদ (মানিকগঞ্জ ২) এবং এসএম জাহিদ (মানিকগঞ্জ ১)

মানিকগঞ্জ: সারা দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের সাবেক সংসদ সদস্যরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকেই জেলার তিনটি সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তিন জাহিদ গা-ঢাকা দিয়েছেন।

বিএনপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মানিকগঞ্জের তিনটি আসন গত চারটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দখলে ছিল।  

মানিকগঞ্জ-০১

ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয় উপজেলা নিয়ে মানিকগঞ্জ -১ সংসদীয় আসনে সবশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পান জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল। কিন্তু কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। নির্বাচনের পরপরই নির্বাচনী এলাকায় বসবাসের জন্য বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। এরই মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর জাহিদ চলে যান আত্মগোপনে। অনেকের ধারণা দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছেন এস.এম জাহিদ। আগেই থেকেই তার পরিবারের সদস্যরা কানাডায় থাকছেন। তারও সেখানকার নাগরিকত্ব আছে বলে কথিত রয়েছে। তিনি সেখানেই চলে গেছেন বলে ধারণা স্থানীয়দের।

তবে এস.এম জাহিদের সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য কেউই দিতে পারেনি ।

মানিকগঞ্জ-০২

সিংগাইর-হরিরামপুর এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি আসন নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-০২ আসন।  ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে পরাজিত হন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ। স্বতন্ত্রে বিজয়ী হলেও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ আহমেদ টুলুও রয়েছেন আত্মগোপনে। খোঁজ নেই মমতাজ বেগমেরও। তবে ব্যক্তি জীবনে সফল ব্যবসায়ী জাহিদ আহমেদ টুলু ঢাকায় বা দেশের অন্য কোথাও বেশ নিরাপদে রয়েছেন বলে দাবি এলাকাবাসীর। মমতাজ বা জাহিদ আহমেদ টুলু ছাড়াও পলাতক রয়েছেন এই আসনের পদধারী সব নেতারাই।

মানিকগঞ্জ-০৩

সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন এবং মানিকগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ ৩ আসন। নৌকা প্রতীকে টানা চার বার এই আসন থেকে বিজয়ী হয় জাহিদ মালেক। প্রথমে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করলেও শেষ সময়ে কোনো মন্ত্রিত্ব ছিল না তার দখলে। সবশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে মফিজুল ইসলাম খান কামালকে পরাজিত করে টানা চার বারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাহিদ মালেক।

সরকার পতনের আগে থেকেই জাহিদ মালেকের অবস্থান নড়বড়ে হতে শুরু করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নানা কেলেঙ্কারি ছাড়াও সানলাইফ ইনস্যুরেন্স, নিজ ও পরিবারের নামে-বেনামে জমি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়াদিসহ একাধিক বিষয়ে আলোচিত-সমালোচিত হন জাহিদ মালেক।  

দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেও ছিল না তেমন বনিবনা। চার বারের সংসদ সদস্য এখন আত্মগোপনে। গ্রামের আলিসান বাড়িতে নেই পরিবারের কেউই। তবে দেশত্যাগের সুযোগ মিলেনি বলে ধারণা অনেকের।  

শুধু এই তিন সংসদ সদস্যই নয়। আত্মগোপনে রয়েছেন আওয়ামী লীগের জেলা-উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় সব নেতাকর্মীরা। এসব নেতাকর্মীদের বিশেষ করে মানিকগঞ্জের তিনটি আসনের তিন এমপির বর্তমান অবস্থান জানতে বেশ আগ্রহী জেলার সাধারণ মানুষ।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলার তিনটি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে নাম পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-কর্মীদের দাবি, সংসদ সদস্যসহ জেলা ও উপজেলার বড় বড় পদ-পদবির নেতারা তাদের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বিধায় তারা আজ আত্মগোপনে আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।