ঢাকা: ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কত মাসের মধ্যে নির্বাচন দেবে তা রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও আওয়ামী দোসরদের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ড. ইউনূস কয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেবেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক দল সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস হচ্ছে বিএনপি। আমাদের নেতা তারেক রহমান। আমাদের নেতা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন একটি নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি বিএনপিকে ক্ষমতায় নিতে চান, যে নির্বাচন দিনে হবে, যে নির্বাচনে মৃত ব্যক্তি ভোট দেবে না। যে নির্বাচন কমিশন হাসিনার কথায় নির্বাচন করেছে এমন নির্বাচন কমিশন যাতে বাংলাদেশে আর কোনোদিন না হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আপনাদেরকে ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করতে দেয়নি। আপনাদের গুলি করেছে, আপনাদের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করেছে। আপনাদের পত্রিকাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। আপনাদের চ্যানেলগুলোকে ডিজিএফআই দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমরা আশা করছি, ড. ইউনূসের এই সরকারের অধীনে আপনারা বুক ফুলিয়ে স্বাধীনভাবে স্বাধীন কলম দিয়ে আপনাদের লেখনি দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ১৬ বছরের হত্যাচার, গুম, মায়ের বুক খালি হওয়ার ইতিহাস তুলে ধরবেন। আমরা এইটুকু আপনাদের কাছে চাই।
ফারুক আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কুচক্রীরা, প্রেতাত্মারা বাংলাদেশের এই সরকারকে অস্থিতিশীল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। ড. ইউনূস বাংলাদেশের আকাশে একটা নক্ষত্র। যিনি বাংলাদেশের মানুষকে বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল করে তুলেছেন। যেভাবে ১৯৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশের মানচিত্র পৃথিবীতে স্থায়ীভাবে ওঠানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি, সেই বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান। শেখ মুজিবুর রহমান আপনি স্বাধীনতার কোথায় যুদ্ধ করেছিলেন? আপনার দল কোথায় যুদ্ধ করেছে? কোন সেক্টরে আপনার লোক যুদ্ধ করেছে? আপনার লোকেরা কলকাতায় বসে ছিল। সেই লোকেরাই ১৬ বছর এই দেশের মানুষের ওপর চেপে বসে তাদের কণ্ঠকে হত্যা করেছে। আজকে আমাদের প্রিয় নেতা ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আবার ষড়যন্ত্র শুরু করেছন। আপনার যতই ষড়যন্ত্র করেন না কেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনোদিনও আওয়ামী লীগের নাম নিয়ে আসতে পারবেন না।
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আপনি মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করে ভারতের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। সীমান্তে যখন আমার ভাইদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, সেই কথাগুলো আপনি কখনোই আমাদেরকে সংসদে বলার সুযোগ দেননি। আপনি এখন দাপটের সঙ্গে হিন্দুস্তানে বসে আছেন। মোদী সরকার আপনার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই, কিন্তু আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে। বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। বাংলাদেশের মানুষ সজাগ। ২০১৩ সালে যে চুক্তি করেছেন, সেই চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত দিতে হবে। যদি স্বাধীন দেশের প্রধানমন্ত্রী আপনি হয়ে থাকেন, বন্দী চুক্তিতে যদি স্বাক্ষর করে থাকেন তাহলে শেখ হাসিনাকে দেশে হস্তান্তর করুন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পাঁচশর অধিক মামলা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে আওয়ামী লীগকে ঘৃণা করে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে, ভারতের বিরুদ্ধেও মানুষ সজাগ হচ্ছে।
গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, আবু নাসের রহমতুল্লাহ, মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
এসসি/এমজে