ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভারতকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা গণতন্ত্র নাকি ফ্যাসিবাদের পক্ষে: দুদু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
ভারতকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা গণতন্ত্র নাকি ফ্যাসিবাদের পক্ষে: দুদু

ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণমানুষের তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা গণতন্ত্রের স্বপক্ষে নাকি ফ্যাসিবাদ যিনি গণহত্যা চালিয়েছে, গণতন্ত্র হত্যা করেছে, স্বাধীনতা বিপন্ন করেছে তার পক্ষ নেবে।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে সীমান্তে হত্যা বন্ধ, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার ও পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবিতে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা বিস্মিত হয়েছি, অন্তর্বর্তী সরকারের ডক্টর ইউনুস জাতিসংঘে সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দিতে গিয়েছিলেন; সেখানে তার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ বৈঠক করেছে। কিন্তু আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত যারা আমাদেরকে বন্ধু দাবি করে, তারা পালিয়ে এসেছে। ডক্টর ইউনূসের সঙ্গে বসেনি। তার মানে তারা গণতন্ত্রের সঙ্গে বসেনি। যে দেশ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন করেছে; ৯০ এ, ২০২৪ সালে গণতন্ত্রের জন্য, দাবি আদায়ের জন্য রক্ত দিতে পারে তার পক্ষে তারা (ভারত) দাঁড়ায়নি।

তিনি বলেন, সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে। এটা শুধু আজকে হচ্ছে তা না, দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত আছে। স্বাধীন সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তা চাইবে এটা স্বাভাবিক। বাংলাদেশি যেসব নাগরিকদের হত্যা করা হয় তারা সীমানার মধ্যেই থাকে। অথচ, কোনো সতর্কতা ছাড়াই তাদের নির্বিঘ্নে হত্যা করা হচ্ছে। এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ; এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটা বন্ধ করতে হবে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের সীমান্তে এরকম বর্বরতা নেই যেটা আমাদের সঙ্গে আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র যারা বন্ধু হিসাবে পরিচয় দেয় তারা করছে।

দুদু আরও বলেন, সীমাহীন লুটপাট, গণতন্ত্র হত্যা, নির্বিকারে মানুষ হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। গত এক দেড় বছর ধরে নয়, ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি নেতাকর্মীসহ যারাই অধিকার আদায়ের কথা বলেছে তাদেরকে হয় গুম করেছে তা না হলে হত্যা করেছে, মামলা দিয়েছে। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত টাকা সরিয়েছে বিশ্বে অন্য কোনো রাষ্ট্রে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নজির নেই। এই টাকাগুলো বিদেশে পাচার করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশে এবং অন্য দেশে পাচার করা হয়েছে।

অর্থ লুটপাটকারীদের হুঁশিয়ার করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশ থেকে অর্থ লুটপাট করে যারা বিদেশে পাচার করেছে সেই টাকা যেখানেই থাক, সাগরের নিচে অথবা শেখ পরিবারের অথবা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর কাছে ভালোয় ভালোয় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ফেরত পাঠান। এ টাকা দেশের জনগণের। খেটে খাওয়া মানুষের এই টাকা যতক্ষণ না পর্যন্ত উদ্ধার হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কারও সঙ্গে আপোষ নাই।

কৃষক দলের সাবেক আহ্বায়ক আরও বলেন, হাসিনা আন্দোলন করবেন নাকি নির্বাচন করবেন এটা তার ব্যাপার। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কখনো হত্যাকারীকে ছাড় দেয়নি। এদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের কাছে কখনো মাথা নত করেনি। যারা পালিয়ে গেছে তাদেরকে এটা মনে রাখতে হবে। আগামী দিন গণতন্ত্রের পক্ষের স্বাধীনতার পক্ষে মানুষের দিন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, আগামী দিনে গণমানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। তারাই বাংলাদেশকে বিপদ মুক্ত করবে এবং ১৬ বছরের যে জঞ্জাল তা পরিষ্কার করবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।

দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্ব ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ইমরান সালেহ প্রিন্স, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাগপার সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, কৃষকদলের নেতা সাদি, মোখতার আকন্দসহ অনেকেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪
ইএসএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।