ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এমন দেশ গড়তে চাই, যেন স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিতে না পারে: তারেক রহমান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
এমন দেশ গড়তে চাই, যেন স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিতে না পারে: তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

ঢাকা: আর কখনো যেন ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, তেমন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা : ৩১ দফার আলোকে সংস্কার’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তারেক রহমান বলেন, আমরা সবাই এমন দেশ গড়তে চাই, যেখানে আর কখনো ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না। একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই, যেখানে গণ-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে, নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার নিশ্চিত করবে জনগণের মালিকানা ও অংশীদারি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও স্বেচ্ছাচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রতিটি লেভেলে নিশ্চিত করা হবে, কেউ জবাবদিহির ঊর্ধ্বে না, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না।

তিনি বলেন, আজ আমরা যারা এখানে উপস্থিত রয়েছি, আমাদের রাজনৈতিক দর্শনে ভিন্নতা আছে; সেটিই স্বাভাবিক। তবে আমি বিশ্বাস করি, ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ধারার মধ্যেও বৃহত্তর পরিসরে আমাদের সবার মধ্যে একটি বিষয়ে আদর্শিক ঐকমত্য রয়েছে। আর সেই বিষয়টি হলো, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের সময় তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি দেখার প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, পতিত সেই রাজনীতির ভিত্তি ছিল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়ন। অন্যদিকে জনগণের ভোটে বিএনপি যদি সরকার গঠন করে, আপনারা দেখতে পাবেন, আমাদের ৩১ দফার আলোকে, জনগণের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারির রাজনীতি। আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হবে আইনের অনুশাসন, মানবাধিকার এবং বাকস্বাধীনতা।

তিনি বলেন, আমরা যদি একটি রুলস-বেসড রাষ্ট্র কাঠামো নিয়ে আসতে পারি, সারা পৃথিবী থেকে প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট ও প্রাইভেট ক্যাপিটাল নিজ গতিতেই বাংলাদেশে আসবে। আমাদের পাবলিক সেক্টরের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে; দেশের উন্নয়ন ও উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে।

বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দল-মত নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে চায় বলেও জানান তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ঠিক যেভাবে আজ থেকে দুই দশক আগে, বিএনপি সরকারের সময়, বাংলাদেশে মিডিয়া নির্ভয়ে সরকারের সমালোচনা করতে পারতো, কার্টুন আঁকতে পারতো; আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আমাকে নিয়ে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মিডিয়ার একাংশ ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেছিল; মিডিয়া ট্রায়াল ও প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন করেছিল। কিন্তু আমরা তার প্রতিদানে কোনো মিডিয়ার কণ্ঠরোধ করিনি, কাউকে হেনস্তা করিনি, কোনো সম্পাদককে জেলে পাঠাইনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৬ বছরে আমার নিজের, আমার দলের এবং গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি তথা আপনাদের অনেকের ফ্রিডম অব স্পিচ, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন এবং ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। সেই উপলব্ধিকে ধারণ করে, আমরা সব নাগরিক, বিশেষত মানবাধিকারকর্মী, সংবাদকর্মী ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সারদের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তোলা, যেখানে ইউটিউব, ফেইসবুক ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিজেদের ভাবনা প্রকাশের কারণে কিংবা প্রধানমন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিষয়ে মন্তব্যের দায়ে কাউকে হেনস্তা করা হবে না। সত্য গোপন করতে মেইনস্ট্রিম ও সোশ্যাল মিডিয়া যেমন বাধ্য থাকবে না, তেমনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে সেটির প্রচারেও সরকার কাউকে চাপ দেবে না। তবে দেশ গঠনের দায়িত্ব সবার এবং আমরা মিডিয়ার কাছ থেকে নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
ইএসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।