ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত দেড় যুগের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে উজ্জীবিত অবস্থায় রয়েছে বিএনপি।
বিশেষ করে ছয় বছর পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করায় দলের নেতাকর্মীরা আরও কয়েকগুণ শক্তি ফিরে পেয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারামুক্ত হয়েছেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, একের পর এক মামলা থেকে খালাস পেয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে, নেতাকর্মীরাও রাজনৈতিক মামলা থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন। সর্বশেষ গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসে ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগদান করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর এ কারণেই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে কয়েক গুণ বেশি উজ্জীবিত হয়েছে।
দীর্ঘ অর্ধযুগ পর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সিলেট সফর করেছিলেন তিনি।
ছয় বছর পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পাশের আসনে বসে তিনি উপভোগ করলেন সশস্ত্র বাহিনী দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। দীর্ঘদিনের অসুস্থতার পরও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ায় খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার আশু রোগমুক্তি কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১৮ সালে দুর্নীতির মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর এ প্রথম কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
দুই বছর কারাগারে থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি পান খালেদা জিয়া। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে তাকে মুক্তি দেন।
সাময়িক মুক্তির পর থেকে তিনি কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে কখনো বাসা থেকে বের হননি। রাজনৈতিক কর্মসূচি বা কোনো ধরনের অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়নি।
খালেদা জিয়া এদিন বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময় রাস্তায় জড়ো হওয়া বিএনপিকর্মীরা পুরো এলাকা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন।
সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠান শেষে বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার সেনাকুঞ্জে যাওয়ার এ ঘটনা গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে ‘ইতিবাচক ভূমিকা’ রাখবে।
এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, যে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়েছে, তা এখনো শেষ হয়নি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এ আন্দোলনের অন্যতম প্রেরণা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বিগত স্বৈরশাসক অন্যায় ও মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারের অন্তরালে আটকিয়ে রেখেছিলেন। দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় দলের নেতাকর্মীরা প্রাণ ফিরে পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
টিএ/জেএইচ