ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

কিছু মানুষ গোটা জাতিকে উসকে দিয়ে অন্ধকারে ফেলছেন: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
কিছু মানুষ গোটা জাতিকে উসকে দিয়ে অন্ধকারে ফেলছেন: ফখরুল কথা বলছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: কিছু মানুষ উসকে দিয়ে গোটা জাতিকে অন্ধকারে ফেলছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘স্বৈরাচারের পতন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাষ্ট্র গঠনে চিকিৎসক সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, কিছু কিছু মানুষ নিজেকে অত্যন্ত জনপ্রিয় মনে করেন। সবচেয়ে দেশপ্রেমিক মনে করেন। আর গোটা জাতিকে আজকে তারা বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়ে, উসকে দিয়ে একটা অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। আপনারা গভীরভাবে চিন্তা করবেন, আমি কারো নাম বলবো না, বলতে চাইও না। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করবেন যারা আমাদের বিভেদের দিকে নিয়ে অনৈক্য করতে চাচ্ছেন তারা আমাদের শত্রু না মিত্র?  

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে এই ২৪ এ আমাকে ভোটের অধিকারের জন্য চিৎকার করতে হচ্ছে। কোন জাতি আমরা! এই কথাগুলো কী কখনো আপনারা জিজ্ঞেস করেন? এবারতো একটা সুযোগ এসেছিল সবাই মিলে একযোগে দেশের একটা পরিবর্তন নিয়ে আসার। ছেলেরাও ছিল সামনে, আমরাও ছিলাম। সবাই মিলে আমরা পরিবর্তনের কাজটা করতে পারি। তিনটা মাস হয়নি এখনো এরমধ্যেই আমাদের আসল চেহারা বের হয়ে এসেছে। এরকম চেহারা নিয়ে কোনোদিনই সাফল্য অর্জন করা যায় না।  

তিনি বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবারই বাংলাদেশের কিছু তরুণ, যুবক প্রাণ দিচ্ছেন। তার স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য। ৫ আগস্টের বিজয় রক্ত ও প্রাণের মধ্য দিয়ে, রক্ত রঞ্জিত রাজপথ দিয়ে। একবার ভাবুন কিভাবে একটা মানুষ নিস্বার্থভাবে দেশের জন্য প্রাণ দিতে পারে! আমরা এটি বারবার এমনটি দেখি, মাতৃকার টানে প্রাণ দিচ্ছে।

সাম্প্রতিক দেশে পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, এখনো স্বৈরাচার পতনে তিন মাস শেষ হয়নি। কি অদ্ভুত! একের পর এক মাঠে নামছে বিভেদ নিয়ে, পত্রিকা অফিসে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে, আমরা কি এমন দেশ চেয়েছিলাম, কেন এত বিভাজন, কেন এত হিংস্রতা? আর কতবার বাংলাদেশকে ওপরে তোলার চেষ্টা করবো? 

দেশে দুই-তিন দিনের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি ভয়াবহভাবে উদ্বিগ্ন। ধর্ম নিয়ে কি উন্মাদনা তৈরি হয়েছে দেশে। তিন মাসের মধ্যে আমাদের আসল চেহারা বের হতে শুরু হয়েছে। পত্রিকার অফিসে আগুন দেওয়া হচ্ছে, আমরা কি বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। জানি আপনারাও আমাকে অনেকজন অনেক কিছু বলেন, স্পষ্ট কথা আমি লিবারেল ডেমোক্রেসি পক্ষের লোক, আমার দলও তাই। আপনার ভিন্ন মত একজনের সাথে থাকতে পারে তাই বলে কি তাকে কথা বলতে দেবেন না? 

পত্রিকা অফিসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। আপনার সাথে আমার মতের অমিল থাকতে পারে, তবে আপনার কথা বলার স্বাধীনতার জন্য আমার জীবন দিয়ে হলেও লড়বো।

তিনি বলেন, এক ফ্যাসিস্ট আমাদের গলা চেপে ধরেছিল, এখন আপনারা একে নিশ্চিহ্ন করতে চান, ওকে ধরতে চান। তাহলে সাধারণ মানুষ কোনো দিকে যাবে? তাদের বিভ্রান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন কেন? এভাবে একটি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, বিভাজনের কাছে কেউ মাথা নোয়াবেন না। আসুন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার করার জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করবো।

ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামের তত্ত্বাবধানে এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
এমএমআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।