ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

আ. লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না: সালাহ উদ্দিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
আ. লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না: সালাহ উদ্দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ

ঢাকা: আওয়ামী লীগ নামে কেউ রাজনীতি করতে পারবে না বলে দাবি তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, আমরা আওয়ামী লীগের গণহত্যার এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক আলোচনা সভায় সালাহ উদ্দিন এ কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আপনারা আওয়ামী লীগকে কোনো কর্মসূচি করার জন্য রাজপথে নামতে দেবেন না—মানি, সমর্থন করি। কিন্তু এভাবে আওয়ামী লীগকে আপনি কয়দিন রাজপথে পুলিশ দিয়ে ঠেকাবেন। আপনারা বলবেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আমরা চাই না, আওয়ামী লীগ এদেশে রাজনীতি করতে পারবে না। কিন্তু কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন? আইনি কোনো পদক্ষেপ এই সরকার নিয়েছে? না। আমরা বলেছিলাম সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করা হোক এবং সেই নিরিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন সংশোধন করার দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। জনগণ দাবি করেছে—এই সরকার অধ্যাদেশ ও আইন সংশোধনের পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। হঠাৎ করে তারা ক্যাবিনেট মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিল, এটা করা যাবে না। কেন? একদিকে চাইবেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, আবার তাদের বিচার করবেন না, আবার পুলিশ দিয়ে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আপনারা বাধা দেবেন, এতো স্ববিরোধিতা ঠিক নয়।

তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখান করেছে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের বিতাড়ন করেছে। সেই আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ নামে রাজনীতি করতে পারবে না—এই আওয়াজ আমরা উঠাচ্ছি। আমরা আওয়ামী লীগের গণহত্যার এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিচার দাবি করছি। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্ধারণ হোক বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কি না, নির্বাচন করতে পারবে কি না।  

বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন যদি আপনারা সোচ্চার হন বিচারের জন্য, দেশের মানুষ চায় বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী রাজনীতির একদম নির্মূল হয়ে যাক সেই—ব্যবস্থা আপনারা নিতে পারেন। সংস্কারের রিপোর্টে সেই বিষয়গুলো আসবে কি না আমি জানি না।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনমুখী সংস্কারের জন্য যে সমস্ত সংস্কার স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়ন করা দরকার আপনারা সেটা চিহ্নিত করুন এবং সব মহলের সাথে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করুন এবং সেটার আইনি সংস্কার করুন। আইনি সংস্কারের পর যদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করার দরকার হয় সেটা করবেন, এর জন্য কত সময় লাগবে আমরা জানি।  

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, বেশি সময় নেওয়ার জন্য আপনারা কোনো কৌশল অবলম্বন করলে জাতি সেটা মেনে নেবে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আপনারা সংসদ নির্বাচন দিতে দেরি করলে জনগণের সামনে তার যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন। আপনারা কি যৌক্তিকতা তুলে ধরেছেন? আপনারা কি আমাদের বক্তব্য কানে তোলেন? এখনো সময় আছে, আমি মনে করি আপনারা সবার সঙ্গে আলোচনা করে একটি নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রদান করুন এবং সেই নির্বাচনী রোডম্যাপ জনগণ যৌক্তিক মনে হয় তা তারা মেনে নেবে।

সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শেখ হাসিনা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করছে। তো শেখ হাসিনার দোসররা তো আপনার উপদেষ্টা পরিষদেও অন্তর্ভুক্ত আছে। আমরা পরামর্শ দিয়েছিলাম আপনি তাদের বাদ দেননি। শেখ হাসিনার দোসররা প্রশাসনে আছে, সর্বোচ্চ পর্যায়ে আাছে। আমরা বলেছিলাম ফ্যাসিবাদের দোসরদের বহাল রেখে আপনি বেশি দূরে যেতে পারবেন না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক সেলিম পারভেজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।