ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া চিঠিতে যা বলল বিএনপি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টাকে দেওয়া চিঠিতে যা বলল বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস ও দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির বিষয়ে পরামর্শ করতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির প্রতিনিধি দল।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  

এ সময় দলটির পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস, বিরাজমান রাষ্ট্র পরিস্থিতির বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে লিখিত চিঠি দেওয়া হয়।  

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

পলাতক স্বৈরাচারের উসকানিমূলক আচরণ জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে
চিঠিতে বলা হয়, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী রক্তঝরা আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর জুলাই-আগস্টে অভূতপূর্ব ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বৈষম্যহীন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের স্বপ্নপূরণের জন্য দেশের জনগণ অপেক্ষমান।

গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য-মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে। এরই ফলশ্রুতিতে অতি সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলকসমূহ ভেঙে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।

গণহত্যার দায়ে আ.লীগকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আনা দরকার
পতিত ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করে যাচ্ছে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহায়তায় দেশের বাইরে থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এই তৎপরতা চালিয়েই যাবে। সুতরাং গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসা দরকার বলেও বিএনপির চিঠিতে বলা হয়।

এতে আরও বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গত ছয় মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি বলে জনমনে প্রতিভাত হয়েছে, ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে। অথচ জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা ছিল দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে, যা বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল।

‘বিরাজমান অস্থিতিশীল রাষ্ট্র পরিস্থিতি, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, অবনতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিনিয়োগ-বাণিজ্যে স্থবিরতা ও বাজার সরবরাহ ব্যবস্থায় নৈরাজ্যপনা ইত্যাদি সীমাহীন জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে প্রতিনিয়ত নানান ধরনের দাবিনামা নিয়ে মব কালচারের মাধ্যমে সীমাহীন জনদুর্ভোগ, সড়কে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টির প্রয়াস লক্ষ্যণীয়, যা মোকাবিলায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে মুন্সিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে। এক ধরনের সামাজিক নৈরাজ্যের বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ফলশ্রুতিতে গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষা ম্রিয়মান হতে শুরু করেছে। ’

দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা দরকার
চিঠিতে বলা হয়, এই পরিস্থিতির উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের সার্বিক আকাঙ্ক্ষা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং সার্বিক গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।  

চিঠিতে আরও বলা হয়, নির্বাচিত সরকার না থাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের গতি স্থবির হয়ে পড়েছে। কেননা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগী দেশসহ বিশ্বের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন সংক্রান্ত অর্থনৈতিক চুক্তি করতে দ্বিধাগ্রস্ত থাকে। তাদের সঙ্গে কোনো দেশ বা সংস্থা কোনো প্রকার সহযোগিতা চুক্তিতে আসতে আস্থা পায় না। উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেশ পিছিয়ে পড়ছে।

ফ্যাসিবাদ উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে, যার মূল ভিত্তিটা রচনা করেছে বিএনপি ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই। কিন্তু গণতান্ত্রিক শক্তি সমূহের অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব সমূহ গৃহীত এবং বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাব গুলোর সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই কেবল উপযুক্ত ফোরাম।

জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাশীঘ্র সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার সাধন করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করাই বর্তমান সরকারের প্রধানতম ম্যান্ডেট। এখন অগ্রাধিকার হচ্ছে, নির্বাচনমুখী অতি আবশ্যকীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের পছন্দের একটি দক্ষ, শক্তিশালী ও কার্যকর সরকার প্রতিষ্ঠা করা। যে নির্বাচিত সরকার সার্বভৌমত্ব অটুট রেখে দেশ ও দেশের জনগণের নিরাপত্তা বিধান করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জীবনমান উন্নয়নের নিশ্চিয়তা দিতে সক্ষম হবে।  

চিঠিতে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটোই একইসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘চার্টার অব রিফর্মস’ তৈরি হতেই পারে, নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে যা বাস্তবায়ন করবে। তাই, আমরা অবিলম্বে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জাতীয় সংসদ গঠনের জন্য সুনির্দিষ্ট রোড ম্যাপ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি। এই সর্বোচ্চ জনআকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানতম এজেন্ডা হওয়া উচিত বলে জনগণ মনে করে।  
 
চিঠিতে বলা হয়, বিদ্যমান ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য এই দেশ এবং দেশের মানুষের মূল চালিকাশক্তি, এই ঐক্যকে বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই। এই ঐক্যের চর্চাকে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। আমরা এমন কোন পদক্ষেপ নিতে পারি না যাতে করে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য এবং গণঐক্য বিনষ্ট হয় অথবা ঐক্যে ফাটল ধরে। সুতরাং অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো মহলকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়।

প্রতিপক্ষকে দুর্বল করা বিজয়ের জন্যই জরুরি
ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময়ে জাতীয় সংসদের মতই স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনেই কারচুপি ও অনাচারের আশ্রয় নিয়ে পতিত স্বৈরাচার দলীয় লোকদের বিজয়ী করা হয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এসব ব্যক্তিরা গোপনে এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যেই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করছে, যাতে সরকারের শাস্তি ও উন্নয়ন প্রয়াস ব্যর্থ হয়। অবিলম্বে সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলার মত ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দিতে হবে। মনে রাখা প্রয়োজন যে, প্রতিপক্ষকে দুর্বল করা বিজয়ের জন্যই জরুরি।

সরকারের উদ্দেশে চিঠিতে বলা হয়, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর আপনাদের দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পরেও দেশের বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ সরকারের নিয়ন্ত্রণণাধীন অনেক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে পতিত সরকারের অপকর্ম এবং অপশাসনের দোসররা স্বাচ্ছন্দ্যে বিরাজ করছে, এমনকি সরকারের উপদেষ্টা পরিষদেও পতিত স্বৈরাচারের কতিপয় দোসর স্থান পেয়েছে দুর্ভাগ্যজনকভাবে। সচিবালয় থেকে শুরু করে সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এসব ব্যক্তিদের একটি কুচক্রিমহল ‘যোগ্য ও অভিজ্ঞ’ বলে বহাল রাখার অপচেষ্টায় রত। অথচ এসব তথাকথিত যোগ্য ও অভিজ্ঞদের যোগ্যতা ছিল ফ্যাসিবাদের তোষণ করা ও নির্বিবাদে অন্যায় আদেশ পালন করা এবং অভিজ্ঞতা হলো অপশাসন ও দুর্নীতি-অনাচার সহায়তার মাধ্যমে নিজেরাও ক্ষমতা ও দুর্নীতির অংশীদার হওয়া। যথাশীঘ্র এদের অপসারণ করা না হলে নিজ স্বার্থেই এরা পতিত ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ও পুর্নবাসনে সহযোগিতা করে দীর্ঘ ১৬ বছর এবং বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের শহীদদের আত্মদানকে ব্যর্থ করে দেবে। সম্ভাব্য বিপর্যয়রোধে এদের বিরুদ্ধে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও তা কার্যকর করার আহ্বান জানাচ্ছি।  

স্বৈরাচারের দোসররা সাবেক প্রভুর ইঙ্গিতে কাজ করছে
বিতর্কিত ও স্বৈচারের দোসরদের অনেককে জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, এ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরও দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকায় স্বৈরাচারের দোসর এসব ডিসিরা আওয়ামী দোসরদের গোপনে অনৈতিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে দ্রব্যমূল্য, আইন-শৃঙ্খলা কিছুই নিয়ন্ত্রণে আসছে না।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের রাতের ভোট, ভোটারবিহীন ভোট, ডামি ভোট অনুষ্ঠানকারী কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, উল্টো তাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা এখনো তাদের সাবেক প্রভুদের ইশারায়-ইঙ্গিতে কাজ করে যাচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত রয়েছেন মর্মে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে বিএনপি বলেছে, এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা প্রকার লক্ষণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্যে মোটেই সুখকর নয়। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো দলের আত্মপ্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাবো। ফ্যাসিবাদবিরোধী দীর্ঘস্থায়ী লড়াইয়ে যুক্ত দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে পতিত স্বৈরাচারী সরকার যেসব মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রারি করেছে, তা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ বিধায় ক্ষতি ও হয়নানির শিকার নিরপরাধ মানুষদের আশ্বস্ত করার জন্য আমরা সরকারকে একটা ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান পুনঃর্ব্যক্ত করছি।

অধঃস্তন আদালতে গায়েবি মামলায় রাতের বেলায় কোর্ট বসিয়ে যেসমস্ত বিচারক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সাজা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, তাদের বিচার ব্যবস্থায় বহাল রেখে স্বাধীন বিচার বিভাগ বাস্তবায়ন করা জনগণের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে।

প্রধান উপদেষ্টা ও তার সরকারের প্রতি বিএনপির সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুন, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ করুন, দ্রুত নির্বাচনী রোড ম্যাপ প্রদান করুন, প্রশাসনের সর্বস্তরে পতিত ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত করুন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫
টিএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।