ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

জামায়াত মুনাফেকি ছাড়া কিছু করেনি: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
জামায়াত মুনাফেকি ছাড়া কিছু করেনি: রিজভী

রাজশাহী: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বিএনপির উদারতার কারণে জামায়াতে ইসলামী এদেশে প্রথম রাজনীতি করার সুযোগ পায়। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের সরকার জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিল।

পরে বিএনপি সরকারের সময় তারা রাজনীতি করার সুযোগ পায়। কিন্তু আমরা সব সময়ই দেখেছি এ দলটির একটাই চরিত্র আছে- সেটা হচ্ছে মুনাফেকি। এ মুনাফেকি ছাড়া তারা আর কিছুই করেনি।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সভাপতি শহীদ অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডলের স্মরণসভায় তাহেরপুর হাইস্কুল মাঠে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব বলেন।

রুহুল কবির রিজভী জামায়াতের সমসাময়িক রাজনৈতিক প্রসঙ্গ টেনে ধরে বলেন, আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করলাম এরশাদের বিরুদ্ধে। হাসিনাও প্রথম দিকে ছিলেন। এরপর কাউকে কিছু না বলে তারা হাসিনা-এরশাদের অধীনে নির্বাচনে চলে গেলেন। বেগম জিয়া বলেছিলেন আমরা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। আর হাসিনা বলেছিল যাবো। হাসিনা একলাফ দিয়ে বলেছিলেন, যারা যাবে না তারা জাতীয় বেঈমান। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গিয়েছিল। জামায়াতও গিয়েছিল। এখন এ যে ছাত্রজনতার আন্দোলন, এ রক্তঝরা আন্দোলন।

ওই দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবু সাঈদ- সে বুক চিতিয়ে বুলেট বরণ করে নিয়ে আমাদের আন্দোলন ইতিহাসের যেই জয় পতাকা উড্ডীন করেছিলেন। তারই অনুপ্রেরণায় ঢাকায় দেখেছি মুগ্ধকে, আমরা দেখেছি ওই শিশু বাচ্চারা একের পর এক আত্মদান দিয়ে শেখ হাসিনার মত এক ভয়ংকর, নৃশংস এক জগদ্দলকে বাংলাদেশ থেকে যখন বিতাড়িত করালো সেই সাহসী বীররা। তারপর আমরা দেখলাম, জামায়াত বলে বসলো "আমরা আওয়ামী লীগের সব কিছু মাফ করে দেবো। তাহলে আপনি আবু সাঈদের রক্ত কীভাবে মাফ করবেন? আপনি মুগ্ধের রক্ত কীভাবে মাফ করবেন? আপনি বলে দিলেন?

জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, যে অন্যায় করে তার চক্রে কোনো না কোনোভাবে সেই চক্রে তাকেই পড়ে যেতে হয়। শেখ হাসিনা মনে করেছিল তাকে কখনও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না। তিনি খুন গুম, হামলা-মামলা দিয়ে পার পেয়ে যাবেন। কিন্তু কিন্তু আল্লাহ একজন আছেন। এখন পালিয়ে গিয়ে তার আশ্রয় এখন হয়েছে ভারতে। কিন্তু শেখ হাসিনা পাসপোর্ট ভিসা ছাড়াই ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে কথা বলছে, উসকানি ছড়াচ্ছে। সেই ভারত আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে গেল? এটা খুবই দুঃখজনক!

এ সময় আওয়ামী লীগের ১৬-১৭ বছরের নানা অনিয়ম দুর্নীতি, খুন, গুম লুটপাট  তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণ শেখ হাসিনার নাম দিয়েছিল মাফিয়া হাসিনা। শেখ হাসিনা নিজের ও আত্নীয় স্বজনদের নামে প্লট নিয়েছেন। তাদের পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত হচ্ছে। বিদেশে টিউলিপের দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত হচ্ছে। কারণ এ দেশের আইন আদালত হাতের মুঠোয় নিয়ে অপরাধ করে পার পাওয়া যায় কিন্তু বিদেশে নয়। বাংলাদেশ টিকে থাকুক, বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক শেখ হাসিনা তা চাননি। ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়েছেন শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা।

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা উন্নয়নের নামে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল করেছেন শুধু টাকা মারার জন্য। ভোটকেন্দ্রে ভোটার না যাওয়া তার সেই সরকারকে একমাত্র স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। কিন্তু ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে পাহারা দিতে পারলো না। শেখ হাসিনা অবৈধ তার পাসপোর্টের বৈধতা নেই তারপরও তারা হাসিনাকে বৈধতা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যদি দ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারি তাহলে এ ছাত্র-জনতার ত্যাগ কিছুটা হলেও শোধ হবে। শহীদ জিয়াউর রহমান খাল কাটার বিপ্লব করেছিলেন। সেদিন থেকে এদেশ আবার দাঁড়াতে শিখেছে।

তাহেরপুর পৌর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আলিম বাবুর সঞ্চালনায় তাহেরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আনম সামসুর রহমান মিন্টুর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল সাঈদ চাঁদ, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা, মহানগর বিএনপি'র যুগ্ম-আহবায়ক নজরুল হুদা, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ মামুন, বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি.এম জিয়াউর রহমান, বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক কামাল হোসেন ও ভবানীগঞ্জ পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।

এছাড়া রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোলাম মোস্তফা মামুনসহ রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
এসএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।