খুলনা: স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামী এখনও বৈষম্যের শিকার। আয়নাঘরসহ সব নিষ্ঠুরতার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার ১৭ বছরের কালোযুগে দেওয়া সব মিথ্যা মামলা ও কথিত রায়ে অনেকেই মুক্তি পেলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনও কারাবন্দী।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনার ঐতিহাসিক শহীদ হাদিস পার্কে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এটিএম আজহারুল ইসলাম এখনও কারাবন্দী কেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে তার মুক্তির দাবি করেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, এটি না হলে জনগণকে নিয়ে রাজপথে লড়াই; এমনকি জীবন দিতেও প্রস্তুত আছি।
তিনি প্রশ্ন করেন, ৫ আগস্টের পরের দিন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হলেও জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে কেন এখনও কারাগারে থাকতে হবে? জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আমরাও তো শরিক। এমনকি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনেও জামায়াত ছিল রাজপথে।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে ফ্যাসিবাদের প্রতীক আখ্যা দিয়ে গোলাম পরওয়ার বলেন, ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে রক্ষার জন্য অন্তত একটি সুবিচার করুন। এটিএম আজহারের দণ্ডকে বাতিল ঘোষণা করুন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানসহ ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা মওকুফের সুযোগ রয়েছে। অবিলম্বে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এটিএম আজহারকে মুক্তি দিন।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগরী ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহনগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান ও মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, জেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলাল, ইসলামী ছাত্রশিবিরের খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, খুলনা জেলা উত্তর সভাপতি আবু ইউসুফ ফকির ও জেলা দক্ষিণ সভাপতি আবু জার আল গিফারী।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর শহীদ পার্ক থেকে শুরু হয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট, পাওয়ার হাউজ মোড় হয়ে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। তবে শেষ মুহূর্তে এসে নগরীর শিববাড়ি মোড়স্থ কেডিএর প্রধান ফটকের পাশে রেলওয়ের ভেতর থেকে মিছিলের শেষ ভাগে একটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। বিকট শব্দে ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়। এ সময় গোটা এলাকা ধোয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
খুলনা মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ককটেল বিস্ফোরণে ইসমাইল হোসেন নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তিনি এ হামলায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫
এমআরএম/এমজে