ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান একক কোনো রাজনৈতিক দলের নয়: জামায়াত সেক্রেটারি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান একক কোনো রাজনৈতিক দলের নয়: জামায়াত সেক্রেটারি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান একক কোনো রাজনৈতিক দলের নয় মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, এটি এ দেশের ছাত্র-জনতার।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’-শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

২০২৪-এ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, বিপ্লব নয় উল্লেখ করে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ মানে হচ্ছে যাকে বাধা দেওয়া যায় না। বাংলাদেশের জনগণ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে সেটি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে। দুই হাজারের অধিক মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছে। হাজার হাজার আহত-পঙ্গুত্ববরণ করেছে। তবুও ছাত্র-জনতাকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। এ গণঅভ্যুত্থান এককভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, এ দেশের ছাত্র-জনতার।

১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪ একসূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের সব আন্দোলন-সংগ্রাম ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। তিনটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনটি শাসক গোষ্ঠীর পতন হয়েছে। ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের আইয়ুব খান, ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের এরশাদ এবং সবশেষে ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম স্বৈরাচার খুনি হাসিনার পলায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পতন হয়। এ পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তি লাভ করে।  

অনেক সত্য ইতিহাস কেন লেখা হয় না- প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড কারা? অনেক বড় দলের নেতারা বলেন, ‘এ আন্দোলনে আমরা সম্পৃক্ত নই’। আর তাদের ছাত্র সংগঠন দাবি করে তাদের নেতৃত্বে বিপ্লব হয়েছে। অথচ যারা বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছে সেই ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এ গণঅভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ববরণকারী সবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাক্ষী এ গণঅভ্যুত্থানের মাস্টার মাইন্ড কারা। রামদা দলের হাত থেকে ইতিহাস বিকৃত করা বন্ধ করতে এ দেশের ছাত্র-জনতা আবারও অপ্রতিরোধ্য হয়ে দাঁড়াবে।  

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ভারতের বিজেপি সরকার বাংলাদেশের জনগণের দুশমন পরিচয় দিয়েছে। তারা আমাদের ভূখণ্ডকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করে মানচিত্র প্রকাশ করে সরাসরি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। আমাদের বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দিবস দাবি করে নরেন্দ্র মোদি পোস্ট করার মাধ্যমে মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ছিনতাই করতে চেয়েছে।  

ভারতকে রাষ্ট্র হিসেবে আমরা শত্রু মনে করি না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের আগামীতেও বন্ধুত্ব হবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে প্রভু নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন সেটা আমাদের জনগণ ঠিক করবে। কোনো দেশের পররাষ্ট্র সচিব এ দেশে এসে সেটি ঠিক করে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। ভারত যদি মনে করে আওয়ামী লীগের পতনের পর তারা অন্য কোনো দলকে সমর্থন দিয়ে সরকারে বসিয়ে এ দেশে আবারও তাঁবেদারি করবে তবে এ দেশের ছাত্র-জনতা সেই সরকারকেও উৎখাত করে ভারতে পাঠিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেসের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল আজিজ।  

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান হাসান, শাহিন আহাম্মদ খান, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সহকারী সম্পাদক আবদুস সাত্তার সুমন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।