ঢাকা: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অন্যতম নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ এখনো কোথাও অপরাধের জন্য অনুশোচনাবোধ করেছে? গণহত্যা যে চালিয়েছে, তার অপরাধই স্বীকার করেনি। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে আগে বিচার করতে হবে।
অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তারপর অন্য কোনো আলোচনা হলে হতে পারে। ’
শুক্রবার রাত ৮টায় রাজধানীর রূপায়ণ টাওয়ারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে দাবি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন হাসনাত।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের যে আলোচনা হয়েছে, সেটিকে আমরা রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা মনে করছি। রাজনীতিবিদরাই রাজনীতি নির্ধারণ করবে। সেটি তাদের হাতেই থাকা উচিত। সে জায়গায় আমরা সন্দিহান বলেই গতকালকে স্ট্যান্ড নিতে হয়েছে। ’
বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ১১ মার্চের মিটিংয়ের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। সেখানে অপরপ্রান্তে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছিল। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, কিছুদিন আগে সেনাপ্রধানের একটি বক্তব্য আপনারা দেখেছেন। এটিকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অসমীচীন হিসেবেই ধরা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানকে যেভাবে অ্যাড্রেস করা হয়েছে, যেভাবে আওয়ামী লীগসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের ইঙ্গিত করা হয়েছে। এসব সার্বিক বিষয়ে আলোচনার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। আমার স্ট্যাটাসে স্ট্রেটফরওয়ার্ড রয়েছে।
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে আমরা ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছি। তখন রাষ্ট্রপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে ছিল। যতক্ষণ ছাত্র-নাগরিক ও ফ্যাসিবাবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো এক রয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা বোধ করছি না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখনো কোথাও অপরাধের জন্য অনুশোচনাবোধ করেছে? গণহত্যা যে চালিয়েছে, তার অপরাধই স্বীকার করেনি। আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে আগে বিচার করতে হবে। অপরাধ স্বীকার করতে হবে। তারপর অন্য কোনো আলোচনা হলে হতে পারে।
হাসনাত বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নাম, মার্কা এবং আদর্শ-তিনটিই অপ্রাসঙ্গিক। এটিকে যদি দেশি বা বিদেশি ষড়যন্ত্র, এজেন্সি থেকে কোনো ধরনের অপচেষ্টা চালানো হয়-আমরা সাধারণ মানুষ ছাত্র-নাগরিক এবং দেড় দশক ধরে যারা নির্যাতিত নিপীড়িত বঞ্চিত, গুম, খুন, হত্যার শিকার হয়েছে, তাদের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত ক্রিয়াশীল দলগুলোর কাছে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; কোনো এজেন্সি এবং কোনো বিদেশি কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৫
এফএইচ/এসএএইচ/এসআইএস