ঢাকা: সংবিধানসহ রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের জন্য গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর অধিকাংশ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত গণসংহতি আন্দোলন। তবে বেশিরভাগ প্রস্তাবে একমত হলেও বেশ কিছু প্রস্তাবে সংশোধনীসহ কিছু প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদারের হাতে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয় গণসংহতি আন্দোলনের একটি প্রতিনিধিদল।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভুঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু ও দীপক রায়।
গণসংহতি আন্দোলন সংস্কার কমিশনের অধিকাংশ প্রস্তাবে একমত হয়ে বেশ কিছু প্রস্তাবে সংশোধনী প্রস্তাব করে এবং কিছু প্রস্তাবে আপত্তি জানায়। এসব প্রস্তাব কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সে বিষয়ে গণসংহতি আন্দোলন সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচনে জোর দেয়।
প্রস্তাব জমা দেওয়া শেষে নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য এদেশের মানুষ বহুদিন ধরে সংগ্রাম করছেন। মানুষের সংগ্রামে বারবারই একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় এখানে সংবিধানসহ রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা ফুটে উঠেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন ও সর্বশেষ ’২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটা বাংলাদেশের মানুষের সামগ্রিক অভিপ্রায়ে পরিণত হয়েছে। জনগণের এই অভিপ্রায়কে স্বীকৃতি দিতেই আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন হিসেবে চায় গণসংহতি আন্দোলন।
তিনি বলেন, জনগণের অভিপ্রায়ের প্রকাশ হিসেবে যখন সংবিধান সংস্কার করা হবে এবং জনগণের গণভোটের মাধ্যমে তা গৃহীত হবে, তখন সেটা হবে সংবিধানের মূল কাঠামো। যাকে রক্ষা করাই হবে সর্বোচ্চ আদালতের দায়িত্ব। এর ভেতর দিয়ে একটি টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তি রচিত হবে। গণসংহতি আন্দোলন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের সঙ্গে সম্পূরক আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। যার ভেতরে আছে ঔপনিবেশিক আইনের বদল করে তাকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের উপযোগী করতে একটি আইন কমিশন গঠন।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আরও বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কীভাবে সমাজে গণতান্ত্রিক পরিসরের ক্ষতি না করে সামগ্রিক বিকাশের স্বার্থে ব্যবহার করা যায়, সে বিষয়েও আইন প্রণয়ন আগামী প্রজন্মের জন্য জরুরি। এ ছাড়া দুর্নীতি দমনে ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংস্কার করে একই পরিবারের একাধিক সদস্যদের বারবার ব্যাংক পরিচালনা পরিষদের সদস্য হওয়ার আইন বদল করতে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। গণসংহতি আন্দোলন সেসব প্রস্তাবেই আপত্তি করেছে, যেগুলোকে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক মনে করে।
তিনি বলেন, এসব সংস্কার বাস্তবায়িত হতে হলে রাজনৈতিক দলসহ জনগণের বিভিন্ন শক্তির ভেতরে ঐক্য প্রয়োজন। এই মুহূর্তে বিভাজনকে বৃদ্ধি না করে ঐক্যের শক্তিকে সংহত করে সংস্কারের প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে গেলেই একটি স্থিতিশীল, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ, জনগণের স্বার্থ রক্ষাকারী, সত্যিকার সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
আরকেআর/এমজেএফ