ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রায়পুরে সংঘর্ষ-হত্যা: বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী আজীবন বহিষ্কার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৫
রায়পুরে সংঘর্ষ-হত্যা: বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী আজীবন বহিষ্কার

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের উত্তর চরবংশীতে বিএনপি দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী ও স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিন নিহতের ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় দলীয় ১৫ নেতা-কর্মীকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীমকেও বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়।

 

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে রায়পুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সালেহ আহম্মদ ও সদস্য সচিব সফিকুর রহমান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।  

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রায়পুর বিএনপির আহ্বায়ক জেড এম নাজমুল ইসলাম মিঠু।  

তিনি জানান, রায়পুর উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাঁতী দলসহ সব সহযোগী সংগঠনের যৌথ সভায় আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে গত ৭ এপ্রিল হামলা, সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত এসব নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়।  

বহিষ্কৃতরা হলেন- উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপিকর্মী মেহেদী কবিরাজ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবাদ উল্যা গাজী, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ফারুক সর্দার ওরফে ফারুক কবিরাজ, ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সফিক রাড়ী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরিফ, ৭ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী ফারুক গাজী ও রায়হান, ৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আল-আমিন কবিরাজ, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মানিক আহমেদ তারেক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর আলী হাওলাদার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী নজরুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলকর্মী শরিফ বাগ, শাহজাহান মাঝি ও ইউনিয়ন কৃষক দলের সদস্য সচিব শাহ আলী।  

বহিষ্কার আদেশে বহিষ্কৃতদের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক, ওঠা-বসা না করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করা হয়। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধেও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।  

গত ৭ এপ্রিল বিকেলে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা ফারুক কবিরাজ ও কৃষক দল নেতা জিএম শামীম পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সে সময় বিএনপিকর্মী স্পেন প্রবাসী সাইজ উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় এবং আহত হন দুপক্ষের অন্তত ১৫ জন। নিহত সাইজ উদ্দিন কৃষক দল নেতা শামীমের অনুসারী ছিলেন। এ ঘটনার জের ধরে ওই এলাকার তিনজনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ১৫ বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।

এদিকে সাইজ উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় এজহারভুক্ত ২৬ জনসহ ২০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি।  

জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর মেঘনার চর, মাছঘাট, বাজার ও কাঁচামালের আড়ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। একপক্ষ উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব জিএম শামীম গাজী ও অন্যপক্ষ ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ফারুক কবিরাজ। এগুলো নিয়ন্ত্রণের জেরে গত ১৯ ডিসেম্বর রাতে ও পরদিন ২০ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজার ও বাবুরহাট বাজার এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। তখনকার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, তাঁতী দল, ছাত্রদল ও সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দলীয় কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। এরপরেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল সংঘর্ষে একজন খুন হন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২৫
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।