ঢাকা, রবিবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১১ মে ২০২৫, ১৩ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

শেখ হাসিনার মতো ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে: রিজভী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:০৮, মে ১০, ২০২৫
শেখ হাসিনার মতো ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে: রিজভী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অদ্ভুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার! অদ্ভুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তারা ১৫-১৬ বছর আগে গুম হওয়া সুমনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে অথচ খুনের মামলার আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি এয়ারপোর্ট দিয়ে পালিয়েছে, সেদিকে তাদের দৃষ্টি নেই।

তিনি বলেন, সরকার প্রকারান্তরে কোনো না কোনোভাবে প্রকৃত ফ্যাসিস্টদের, প্রকৃত স্বৈরাচারদের পুনর্বাসন করছেন কি না, এটা কিন্তু জনগণের মধ্যে সংশয় দেখা যেতেই পারে। এই ধরনের সংশয় কিন্তু তৈরি হয়েছে।

শনিবার (১০ মে) দুপুরে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল কলেজটির ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটা দায়িত্বশীল নির্বাচিত সরকার থাকলেই তাদের জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকে, শেখ হাসিনার সেটি ছিল না, তার উদ্দেশ্য ছিল—তোরা যে যাই বলিস, আমি আমার ক্ষমতা ছাড়ছি না। যার ফলে শেখ হাসিনা একটার পর একটা ন্যারেটিভ তৈরি করতেন। কারণ তিনি আজীবন ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন। তিনি গণতন্ত্র মানেননি, তিনি গণতন্ত্রের চর্চা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান—এগুলো কোনোকিছুই তার কাছে কোনো ধর্তব্যের বিষয় ছিল না। অপপ্রচার করে নাশকতার কথা বলে, জঙ্গির কথা বলে এই কাজগুলো করেছেন শেখ হাসিনা। এখনো কিন্তু নানাভাবে ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে। তাহলে তো একইভাবে শেখ হাসিনারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আজকে যদি নির্বাচিত সরকার থাকতো তাহলে শাকসবজির দাম মুরগির দাম যে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার জন্য জনগণ তাদের কাছে জবাবদিহি চাইতো। কিন্তু এই সরকারের তো কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা শুধু বলছে আগে সংস্কার হোক তারপরে নির্বাচন। গতকাল রাজধানীর আদাবর এলাকায় সারা রাত বিদ্যুৎ ছিল না, এর জন্য আমরা কাকে বলব? নির্বাচিত সরকার থাকলে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মেয়র যারা থাকেন তাদের মধ্যে একটা দায়বদ্ধতা থাকে, ভবিষ্যতে ভোটের আশায় তারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেন। এই সরকারের তো কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

রিজভী বলেন, খুনের আসামি সাবেক রাষ্ট্রপতি চলে গেলেন। নানা কথা আমরা নানা দিক থেকে শুনতে পাচ্ছি। বিএনপি কোনো কথা বললেই নানা ধরনের অভিযোগ করা হয়। বিএনপি তো গণতন্ত্রের প্রশ্নে বরাবরই আপসহীন। যার কারণে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীরা রাস্তায় মার খেয়েছে, গুম হয়েছে, বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ১৫-১৬ বছর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে তাদের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, লড়াই করেছে সংগ্রাম করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে গড়িমসি করছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, সরকার যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে গড়িমসি করছে, এটাই হচ্ছে জনগণের সংশয়ের সবচেয়ে বড় কারণ। এটা নিয়ে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সংশয় তৈরি হয়েছে। যার কারণে আমরা এই পরিস্থিতি এবং পরিণতিগুলো দেখছি যে, সাবেক রাষ্ট্রপতি হত্যা মামলার আসামি চলে যাচ্ছেন এয়ারপোর্ট দিয়ে, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিছু জানে না। অথচ হাসিনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে গুম হয়েছে যারা, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি নাম হচ্ছে সুমন; তার বোন সানজিদা তুলি ২০১৪ সাল থেকে ‘মায়ের ডাক’ নামে একটি সংগঠন করে, যারা গুম হয়েছে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। এটা কি সরকার জানে না? অথচ গত বৃহস্পতিবারে তার বাসায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালিয়েছে। কি অদ্ভুত বিষয় না?

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ডা. জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা ডা. তৌহিদ আওয়াল প্রমুখ।

টিএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।