ঢাকা, সোমবার, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২, ১২ মে ২০২৫, ১৪ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে যা বলছে বিএনপি

তানভীর আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৩২, মে ১১, ২০২৫
আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে যা বলছে বিএনপি ফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার নয় মাসের মাথায় দলটির সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দীর্ঘদিনের দাবির ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে তীব্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।

তারা বলছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে আগেই জানানো হয়েছে। তবে আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না, এমন মন্তব্যও করেছেন তারা। আবার কেউ বলছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়টিকে আড়াল করতেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেছেন, দলের পক্ষ থেকে আমরা কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানিয়েছিলাম যে, আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। যদি সেই সময়ে বিষয়টি আমলে নেওয়া হতো, তাহলে হয়তো আজ এই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে সরকারকে পড়তে হতো না।

তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানাই যে, তারা দেরিতে হলেও বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করছে। তবে ভবিষ্যতেও আমরা আশা করি, সরকারের কাছে আমাদের পরামর্শগুলো সময়মতো আমলে নেওয়া হবে। আমরা দেশের স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জন্য সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে। এই আইনে কিছু সংশোধনী আনতে হবে, যাতে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায়। এধরনের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলানিউজকে বলেছেন, গতকাল রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত এসেছে, সেটি অনেক পুরাতন। এ বিষয়ে উপদেষ্টারাও এর আগে কথা বলেছেন। তবে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি কতটুকু আনা সম্ভব হয়েছে, সেটি মূল বিষয়। তাছাড়া হাসনাত আব্দুল্লাহর এক ঘণ্টার নোটিশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাটা খুব বেশি ভালো সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়নি।

মূলত একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টিকে আড়াল করতেই এমন ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সুষ্ঠু রোডম্যাপ ঘোষণার বিষয়টিকে আড়াল করতেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন শামসুজ্জামান দুদু।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর সেটি পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্য করা উচিত। তা না হলে কোনো খবর থেকে গেলে ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতি হবে। তবে সরকার আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে সদিচ্ছা দেখিয়েছে, সেটাকে স্বাগত জানাই। আমরা বলব, আইনজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য।

টিএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।