ঢাকা, বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২১ মে ২০২৫, ২৩ জিলকদ ১৪৪৬

রাজনীতি

স্লোগানে উত্তাল মৎস্য ভবন-কাকরাইল এলাকা

সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩:২৯, মে ২১, ২০২৫
স্লোগানে উত্তাল মৎস্য ভবন-কাকরাইল এলাকা মৎস্য ভবনের সামনের মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা। ছবি: ডিএইচ বাদল

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবিতে তার সমর্থকদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে পড়েছে মৎস্য ভবন, কাকরাইল, রমনা, হাইকোর্ট ও প্রেসক্লাব এলাকা। আন্দোলনকারীরা তাদের স্লোগানে অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের কথা বলছেন।

কয়েকদিন ধরে নগর ভবনের সামনে আন্দোলনরতরা বুধবার (২১ মে) সকালে ওই এলাকা ছেড়ে মৎস্য ভবন ও এর আশপাশে আসতে থাকেন। এক পর্যায়ে মৎস্য ভবন ছাড়িয়ে একদিকে কাকরাইল, অন্যদিকে হাইকোর্ট গেট, জাতীয় প্রেসক্লাব ও শিক্ষা ভবনের আশপাশে বিপুল লোকসমাগম ঘটে। এসময় চারদিকে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রচণ্ড রোদ ও গরমকে উপেক্ষা করে পিচঢালা রাস্তায় বসেই স্লোগানে স্লোগানে এলাকা মুখর করে রেখেছেন ইশরাকের সমর্থকরা। তারা বলছেন, ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে।

এদিকে আন্দোলকারীরা ওই এলাকার সড়ক বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

বাবার মোটরসাইকেলে করে স্কুলে যাচ্ছিল আশফিয়া। রাস্তা আটকে দেওয়ায় যানজটে পড়ে মেয়েটি। আশফিয়ার বাবা সুফিয়ান বাংলানিউজকে বলেন, রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি আগে থেকে জানা থাকলে অনেকেরই উপকার হয়। এরকম হুটহাট রাস্তা বন্ধ করার কারণে আমাদের মতো অনেকেরই বিপদে পড়তে হয়।

অফিসযাত্রী মাসুদ বলেন, আন্দোলন করুক সমর্থন আছে। কিন্তু এভাবে রাস্তা বন্ধ করে হাজার হাজার মানুষকে কষ্ট দিয়ে না। গাড়িতে শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীরা থাকেন। তাদের কথা চিন্তা করে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি সবার পরিহার করা উচিত।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচন কমিশন ২ ফেব্রুয়ারি ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে। এরপর শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তাপস।

সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে তাপস পেয়েছিলেন সোয়া চার লাখ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ইশরাক পান দুই লাখ ৩৬ হাজার ভোট। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেন ইশরাক।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের সব সিটি করপোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করা হয়। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন অতিরিক্ত সচিব শাহজাহান মিয়া।

এর মধ্যে গত ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম।  

আদালত ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। এ রায় পাওয়ার পর ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।

তবে গেজেট প্রকাশের দিন ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায় ও ডিক্রির বিরুদ্ধে আপিল করতে আইনি নোটিশ দেন রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নামে দুই ব্যক্তি। নোটিশে গেজেট প্রকাশ এবং ইশরাককে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

এরপর মামুনুর রশিদ হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে ২৭ মার্চের রায় এবং ২৭ এপ্রিলের গেজেট কেন বেআইনি হবে না এবং ইশরাক হোসেনের শপথ পরিচালনা থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

ডিএইচবি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।