ঢাকা: অনেক দাগী আসামী রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নিচ্ছে বলে স্বীকার করলেন রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির প্রধান ও আইন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকে রোববার অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির ১৬তম সভাশেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।
আইন প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা মানুষ, আমাদের ভুল হতেই পারে। তবে এ ধরনের কোন কিছু ঘটলে আমাদের নজরে আনলে তা বাতিল করা হবে।
এরকম অন্তত দুটি মামলার সুপারিশ বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কমিটির ১২তম সভায় কক্সবাজারের উখিয়ার একটি এবং ১১তম সভায় ঠাকুরগাঁও একটি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ ১৬তম সভায় বাতিল করা হয়েছে। মামলা দুটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করার বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় কমিটি এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বিরোধী দলের কোন মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জানান, বৈঠকে শেরপুর জেলা বিএনপির নেতা ও দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ মাহমুদুল হক রুবেল ও জাহেদ আলী চৌধুরীর মামলা উত্থাপিত হলেও সেগুলোর আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
কারণ হিসেবে তিনি জানান, এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে কোনো সুপারিশ পাওয়া যায়নি এবং মামলা দুটি রাজনৈতিক বিবেচিত না হওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।
আইন প্রতিমন্ত্রী জানান, কমিটির ১৬তম বৈঠকে ৬৪৭টি মামলা প্রত্যাহরের আবেদন উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ৬০৪টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন ছিল। এর মধ্যে ৩২৫টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়, ফেরত দেওয়া হয় ৪৯টি আর ২৩০টি মামলার প্রত্যাহারের আবেদন আরও পরীা-নিরীা করতে বলা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন ছিল ৪৩টি। এর মধ্যে ১৫টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। ১৭টি আবেদন ফেরত পাঠানো এবং ১১টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন আরও পরীা-নিরীার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় রোববার যাঁদের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রামের মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সরকার দলীয় সাংসদ আবদুর রহমান বদি, ইঞ্জিনিয়ার আফসার উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ মসির উদ্দিন ও জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ আবদুল গাফফার বিশ্বাস।
এ পর্যন্ত রাজনৈতিক বিবেচনায় ৮ হাজার ২শ’ ৪২টি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে দন্ডবিধির ৩ হাজার ৭৭৮ টি এবং দুদকের ৩শ’ ৪০টি মামলাসহ ৪ হাজার ১শ’ ১৮ টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৫৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১০