ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

২০ দলীয় জোটের হরতাল শুরু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪
২০ দলীয় জোটের হরতাল শুরু ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: গাজীপুরে খালেদা জিয়াকে জনসভা করতে না দেওয়া এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ২০দলীয় জোটের ডাকে সোমবার ভোর ৬টা থেকে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শুরু হয়েছে।
 
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে গুলশান কার্যালয়ে দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে হরতালের সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া।

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হরতাল ঘোষণা করেন।
 
হরতালের আগের দিন রাজধানীর কাজীপাড়ায় চলন্ত অটো রিকশায় দুর্বৃত্তরা পেট্রল বোমা মারলে মা, মে ও ছেলেসহ একই পরিবারের তিন অগ্নি দগ্ধ হন।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে হরতালের সমর্থনে বিচ্ছিন্ন মিছিল, ককটেল বিস্ফোনণ ও পিকেটিং হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
 
এদিকে হরতাল মোকাবেলা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার রাত থেকে বিজিবি নামানো হয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহরগুলোতে।
 
হরতালকে ঘিরে বরাবরের মতো সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোববার বিকেলের আগেই যার যার প্রয়োজন সেরে দ্রুত ঘরে ফিরতে দেখা গেছে অনেককেই। সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীর রাজপথ অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। মানুষের ব্যক্তিগত গাড়িও খুব একটা রাস্তায় দেখা যায়নি। গণ পরিবহনের চাপও ছিলো কম।
 
খালেদা জিয়াকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে ডাকা এ হরতাল মোকাবিলায় মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্পটে বিক্ষোভ সমাবেশ করার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন তারা।
 
এদিকে আওয়ামী পন্থি  কয়েকটি পরিবহন  মালিক ও শ্রমিক সংগঠন হরতালের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে গাড়ি চালানোর ঘোষণা দিয়েছে।
 
খাবার ও ওষুধের দোকান, অ্যাম্বুলেন্স, সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বহনকারী গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
 
এ ছাড়া গাউসুল আযম সম্মেলন উপলক্ষে চট্টগ্রাম লালদিঘি ময়দান এবং এর আশপাশের এলাকা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
 
এদিকে হরতালের আগের দিন অন্তত তিন দফা সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী অভিযোগ করেছেন, হরতাল সামনে রেখে সারা দেশে ব্যাপক হারে ধরপাকড় চালাচ্ছে সরকার।
 
তাছাড়া রোববার কাজীপড়ায় চলন্ত অটোরিকশায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপের দায়ও সরকারের বিশেষ বাহিনী ও কথিত এজেন্টদের ওপর চাপিয়েছেন রুহুল কবীর রিজভী।
 
ভোটাধিকার রক্ষায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিতে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে জনসভা করতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া।
 
কিন্তু বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজাকার বলায় ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ কর্মীরা গাজীপুরে খালেদা জিয়াকে প্রতিহ’র ঘোষণা দেয়। খালেদা জিয়ার জনসভাস্থল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে পাল্টা সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় তারা।
 
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসন ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠ এবং এর আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে।
 
এর প্রতিবাদে ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরে হরতাল ও সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। আর একদিন পর ২৯ ডিসেম্বর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি পালন করছে তারা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।