ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

ঢাকাসহ ১৪ জেলায় হরতাল, জামালপুরে ট্রাক ভাঙচুর

কান্ট্রি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫
ঢাকাসহ ১৪ জেলায় হরতাল, জামালপুরে ট্রাক ভাঙচুর ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে ঢাকা ও এর আশপাশের ১৩ জেলায় ছাত্রদলের ডাকা সোমবারের (১২ জানুয়ারি) সকাল-সন্ধ্যা হরতালে জামালপুরের ইসলামপুরে ট্রাক ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা।

সোমবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল শেষে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।



এছাড়া অন্য কোনো জেলায় হরতালের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি।

বাকি জেলাগুলো হলো-নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনা।

রোববার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক এম আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে হরতালের বিষয়টি জানানো হয়।

এদিকে, ইসলামপুরে ট্রাক ভাঙচুরের অভিযোগে বিএনপির দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানায়, হরতাল সমর্থনে ছাত্রদলের নেতৃত্বে একটি মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে ইসলামপুরে ডাকবাংলোর সামনে ঢাকাগামী একটি ট্রাকে ভাঙচুর করে তারা।

ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে, রোববার দুপুরে জামালপুরের বকশীগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী তিনটি বাসে ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা। এ ঘটনার জেরে বকশীগঞ্জ-ঢাকা রোডেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বকশীগঞ্জ বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করতে না দেওয়া, খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে ওই দিন থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট।    

এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্ত পিকেটিং ও মিছিল হয়েছে। তবে হরতাল আহ্বান করা শীর্ষ নেতাদের দেখা মেলেনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামান যৌথ বিবৃতিতে সোমবার নারায়ণগঞ্জে হরতাল ডাকলেও তাদের কাউকেই এদিন মাঠে দেখা যায়নি।

সকাল পৌনে ৮টায় সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে জেলা যুবদল সভাপতি মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে হরতালের পক্ষে মিছিল বের করে। ওই সময়ে তারা কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ ধাওয়া করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

সাড়ে ৮টায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের দুইজন যুগ্ম আহ্বায়ক রাশিদুর রহমান রশো ও শাহেদ আহমেদসহ ছাত্রদল নেতা পাপন, আপনের নেতৃত্বে শহরের গলাচিপা এলাকায় মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন বন্ধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ এসে ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এর আগে সকাল ৮টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লায় খান সাহেব ওসমান আলী জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে জেলা কৃষক দলের সেক্রেটারি উজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়।

একই সময়ে একই স্থানে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রনির নেতৃত্বে মিছিল হয়।

একই সময়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের সমর্থকেরা ঢাকা-পাগলা-নারায়ণগঞ্জ সড়কের ইসদাইর অক্টো অফিসের সামনে মিছিল বের করে সড়কে আগুন দেয়।

সকাল ৭টার দিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুজ্জামানের লোকজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো এলাকাতে বিক্ষোভ করে।

এদিকে, হরতালের তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি মানিকগঞ্জে। সোমবার সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই থেকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত কোথাও কোনো ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া যায়নি।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। মহাসড়কের আশপাশের পোশাক কারখানার কর্মী পরিবহনগুলোও চলাচল করছে অন্যান্য দিনের মতোই।

তবে মহাসড়কে দূরপাল্লার কোনো পরিবহন চলাচল করছে না। মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী পরিবহনগুলোর টিকিট কাউন্টারগুলোও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু মহাসড়কে লোকাল বাসসহ বিভিন্ন যান চলাচল করছে স্বাভাবিকভাবেই।

বাংলানিউজের টাঙ্গাইল ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, জেলা ছাত্রদলের ডাকা সোমবারের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে টাঙ্গাইলের কোথাও কাউকে পিকেটিং করতে দেখা যাযনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে সোমবার টাঙ্গাইল ও ঢাকাসহ আশপাশের ১৪ জেলায় ছাত্রদলের ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছে।

হরতাল চলাকালে শহরের কোথাও কোনো পিকেটিং হয়নি। তবে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কোর্ট চত্বরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করেন।
 
শহরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে দূপাল্লার কোনো বাস শহর ছেড়ে যায়নি।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়া বেলা পৌনে ১২টা পর্যন্ত বাকি জেলাগুলো থেকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫/আপডেট: ১২৫৯/আপটেড: ১৪৩৮ ঘণ্টা

** টাঙ্গাইলে পিকেটার শূন্য হরতাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।