ঢাকা: কূটনৈতিক জোন হিসেবে বিবেচিত গুলশান-বনানী-বারিধারা থেকে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় (পার্টি অফিস) সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে বিবেচিত কূটনৈতিক জোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।
সূত্র বলছে, বিভিন্ন দেশের দূতাবাস বা হাইকমিশন ও কূটনীতিকদের আবাসস্থলকে কূটনৈতিক জোন হিসেবে ধরা হয়। এসব এলাকায় যাতে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস না থাকে তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর ফলে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয় ছাড়াও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন শাখা সংগঠনের অফিস সরিয়ে দেওয়ার বাস্তবতা তৈরি হলো।
সূত্র বলছে, কূটনৈতিক জোন থেকে রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে নিতে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক চাপ অনেক আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু কেবল পরিস্থিতি কোনো কারণে উত্তপ্ত হলেই বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসতো। আর তখনই বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠতো ওই এলাকা থেকে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার-দেওয়ার। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবার পর সবাই বেমালুম ভুলে যেতো বিষয়টি। আর তাই ধামাচাপা পড়ে যেতো ইস্যুটি।
কিন্তু এবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া টানা দুই সপ্তাহ ধরে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পর বিষয়টা নিয়ে সরকারেরর টনক নড়েছে। ফের আলোচনায় আবারও উঠে এসেছে কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার ইস্যুটি।
এরই মধ্যে প্রভাবশালী বেশ ক’টি দেশের দূতাবাস বা হাই কমিশন থেকে সরকারকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে, কূটনৈতিক জোন থেকে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় যেন সরিয়ে নেওয়া হয়। আর সরকারও বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই (সিরিয়াসলি) নিয়েছে।
বিশেষ করে কূটনৈতিক জোনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় হয়ে উঠেছে সর্বমহলের মাথাব্যথার কারণ।
সর্বশেষ রোববার বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের একমাত্র এমপি আবুল কালাম আজাদও গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
কেননা গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে নেতাকর্মীদের ভিড় নিত্যকার ঘটনা। যেহেতু তিনি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যানই না, তাই নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে অগত্যা গুলশানেই ছুটে যান।
এর ফলে তার কার্যালয় ঘিরে নেতাকর্মীদের ভিড় যেমন জমে যায়, তেমনি মিছিল-স্লোগানের শব্দও শোনা যায়।
এরই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া গত ৩ জানুয়ারি থেকে তার কার্যালয়ে লাগাতার অবস্থান নিয়ে অবরোধের মতো বড় কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে এখন সামনে এসেছে কূটনৈতিক জোন থেকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়সহ আর কোনো দলের কার্যালয় থাকলে সব সরিয়ে দেওয়ার দাবি।
এরই মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে এ নিয়ে প্রয়োজনীয় তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫