ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিবাদে চার তরুণের অনশন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫
রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিবাদে চার তরুণের অনশন ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সিলেট: রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে সহিংসতার প্রতিবাদে চার তরুণ সিলেটে অনশন শুরু করেছেন। এ ছাড়া তাদের ঘোষিত দুটি দফাও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।



সোমবার থেকে ‘মানুষ ও মাতৃভূমির ডাকে সাড়া দিন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘আমরা কয়েকজন সাধারণ বাংলাদেশি’র ব্যানারে টানা ৩৬ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি পালন করছেন চার তরুণ।

রাজনৈতিক সহিংসতার মাধ্যমে নির্বিচারে মানুষ হত্যা ও জনজীবন বিপর্যস্ত করার প্রতিবাদে ও দুই দফা দাবি আদায়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন।

চার তরুণ তাদের এই কর্মসূচিকে সাধারণ মানুষের ‘শান্তির জন্য বিদ্রোহ’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

সোমবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে নগরীর চৌহাট্টার আলিয়া মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন ফুটপাতে বসে অনশন করছেন তারা। শীতের সকালের তীব্র ঠাণ্ডা উপেক্ষা করেই তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন।

অনশনকারী চার তরুণ হচ্ছেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মেহেদী হাসান, মোজাম্মেল হাসান জিন্নাত, মো. আব্দুল্লাহ রাসেল ও মো. রেজাউল হক মুরাদ।

তাদের দাবি দুটি হচ্ছে- ‘অবিলম্বে সাধারণ জনগণের ওপর চলমান অত্যাচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া’ এবং ‘বিগত বছর ও চলতি বছর মিলিয়ে রাজনৈতিক সহিসংতায় দুইশ’র বেশি সাধারণ মানুষ হত্যার জন্য ২০ দল এবং ১৪ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত সব রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রধানকে জাতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া ও ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করা’।

অনশনকারী দলের প্রধান মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে জানান, গত বছরের শুরুর দিকে নির্বাচনকালীন সহিংসতা থামানোর জন্য ঢাকায় তারা এমন একটি কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু, এর ফল হিসেবে ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি পুলিশ তাদের শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, বিগত বছরে বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে ঘোষিত কর্মসূচি সম্পন্ন না করেই ঘরে ফিরে এসেছিলাম। তবে আশা ছিল, সাধারণ জনগণকে হয়ত-বা আর কখনো এ ধরনের  বীভৎসতার মুখোমুখি হতে হবে না। কিন্তু বর্তমানে তারা আবারও সেই একই ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

মেহেদী হাসান বলেন, সরকারি দল আর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ক্ষমতার কাড়াকাড়িতে বলির পাঠা হচ্ছেন সাধারণ জনগণ। একদিকে, ২০ দলীয় জোট ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হিংস্র হয়ে উঠেছে।

অপরদিকে, সরকার ক্ষমতা রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু বক্তৃতা ও বিবৃতি দিয়েই দায় সারছে। ফলে, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না।

নাশকতার জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দুইপক্ষই নিশ্চিতভাবে দায়ী উল্লেখ করে তিনি বলেন, উভয়পক্ষের নাশকতার বলি হচ্ছে, আমাদের মতো সাধারণ জনতা। আর সাধারণ জনতার হয়ে কোনো রাজনীতি দাঁড়াবে না।

সাধারণ মানুষকেই সাধারণ মানুষের জন্য দাঁড়াতে হবে উল্লেখ করে অনশনরত মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে  বলেন, সাধারণ জনতার হয়ে কোনো রাজনীতি দাঁড়াবে না বলেই আমাদের জন্য আমরাই করছি। আমাদেরকেই নিজেদের জন্য দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। আমরা খুবই সাধারণ কয়েকজন মানুষ। আমাদেরও পরিবার-পরিজন আছে। তাদের কথা ভাবতে হয়; নিজের ভবিষ্যতের কথাও ভাবতে হয়! জীবিকা নির্বাহের কথাও ভাবতে হয়!

এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এই পরিস্থিতিতে আমাদের পক্ষে আর বসে থাকা সম্ভব হচ্ছে না বলেন মেহেদী হাসান।

তিনি জানান, ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে দেশের এবং দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার ওপর বিশ্বাস রেখে ‘২ দফা দাবি’ আদায়ে অনশন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চার তরুণ।

এ ছাড়া বুধবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় একই স্থানে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে পরবর্তী ঘোষণা দেবেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।