ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

চোরাগোপ্তা হামলায় সব অচলের কৌশল!

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৫
চোরাগোপ্তা হামলায় সব অচলের কৌশল! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ( ফাইল ফটো)

ঢাকা: আরো কঠোর হচ্ছে সরকার বিরোধী চলমান আন্দোলন। তাই হরতাল-অবরোধের সমর্থনে জ্বালাও-পোড়াও আরো বেগবান করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

  

এ পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে শুক্রবার রাত থেকে সারাদেশে বাড়ানো হয়েছে চোরাগুপ্তা হামলা। নেতাকর্মীদের নিরাপদে থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থবির করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে।

দলীয় সূত্র বলছে, সড়কের পাশাপাশি রেল আর নৌপথও অচল করে দিতে চায় ২০ দলীয় জোট। তবে দলীয় নেতাকর্মীদের মিছিলের মতো প্রকাশ্য কর্মসূচি এড়িযে চোরাগোপ্তা হামলায় উৎসাহিত করা হয়েছে।

তৃণমূল থেকে টানা অবরোধের মতো অসহযোগ কর্মসূচির দাবি থাকলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় সে পথ মাড়াচ্ছে না কেন্দ্র। এক্ষেত্রে নেত‍াকর্মীদের দীর্ঘ মেয়াদে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কৌশলে টিকে থেকে অসহযোগ পরিস্থিতি তৈরি করে রাখতে বলা হচ্ছে।

গোয়েন্দা সূত্র বলছে, নতুন করে রেললাইনের ফিশ প্লেট তুলে ফেলা, একযোগে সারাদেশের গণপরিবহনে হামল‍া চালানোর কৌশল নিয়েছে বিশ দল।  

জোট নেত্রী খালেদা জিয়াও কিছুতেই মাঠ ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নিজের দল ও জোটকে নিয়ে লড়বেন বলে পণ করেছেন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নত হবেন না সরকারের কাছে।

তিনি বলেছেন, কোনো অনৈতিক চাপ বা ভীতির মুখে নত হবো না। যে কোনো পরিস্থিতি বা পরিণতির জন্য তৈরি আছি।

কার্যত সরকারকে চাপে ফেলতে যতো দিক দিয়ে সম্ভব সমন্বিত অসহযোগ তৈরি করে দাবি আদায়ই এখন প্রধান লক্ষ্য খালেদা জিয়া ও তার দলের।
আর এর মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় যে কোনো মূল্যে বিঘ্ন ঘটানোর নির্দেশনা আছে বিএনপির হাই কমান্ড থেকে। তাই রোববার থেকে আরো এক দফা দেশব্যাপী টানা ৭২ ঘণ্টা হরতাল পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, এই ৭২ ঘণ্টার হরতাল শেষ হওয়ার আগেই আরো হরতালের ঘোষণা আসবে। টানা ৭২ ঘণ্টার সঙ্গে আরো ৩৬ বা ৪৮ ঘণ্টা যোগ করে যেমন পুরো সপ্তাহজুড়েই হরতাল দিয়ে দেওয়া হতে পারে, তেমনি আরো টানা ৭২ ঘণ্টা বা তারও বেশি সময়ের হরতাল ঘোষণ‍া করে লাগাতার পরিস্থিতিও তৈরি করা হতে পারে।

তবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই খালেদা জিয়াকে শুক্র ও শনিবারকে হরতালের বাইরে রাখার আহবান জানিয়েছেন।

তাই আপাতত শুক্র ও শনিবার হরতাল না দিলেও সরকারকে চাপে ফেলতে আগামীতে শুক্র ও শনিবারসহ লাগাতার হরতাল ঘোষণারও পরিকল্পনা রয়েছে খালেদার।

তার পক্ষ থেকে নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে, কোনো স্পটেই বেশি সময় অবস্থান করা যাবে না।   প্রয়োজন অনুযায়ী পরিবর্তন আনতে হবে কৌশলে। আর সারাদেশেই সরকার বিরোধী তৎপরতায় বেগবান করতে হবে সমানতালে।

এ পরিকল্পনার আওতায় শুক্রবার রাত থেকে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহনে ঝটিকা হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।   এবারের চলমান আন্দোলনে একরাতে একযোগে এতো স্থানে হামলা কমই হয়েছে।

দলীয় সূত্রের আভাস, আন্দোলনের এই মাত্রা আর কমবে না। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকাল প্রয়ানের পর আন্দোলন আরো কঠোর করারই গোঁ ধরেছেন খালেদা জিয়া। তিনি জানেন, এবারের আন্দোলন ব্যর্থ হলে ফের আন্দোলন গড়ে তোলারই শক্তি হারাবে তার দল। তাই তার এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।   পিঠু হঠার আর কোনো সুযোগ নেই তার। তাই আন্দোলন আরো কঠোরই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৫

** শাহবাগে ককটেল বিস্ফোরণে আহত ৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।