ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

ভাই সরেন, শিবির আইতাছে

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৫
ভাই সরেন, শিবির আইতাছে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ময়মনসিংহ: রোববার (ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টা। ময়মনসিংহ শহরের নাসিরাবাদ স্কুলের সামনে হঠাৎ জটলা।



জামায়াত-শিবিরের ১০ থেকে ১২জন নেতাকর্মী ব্যানার নিয়ে স্লোগানও দিতে দিতে দৌড়ে আসছেন। মিছিলের সামনে এক কিশোর কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছিলেন।

মাত্র একশ’ গজ এগুতেই মিছিল শেষ! আকুয়া মাদ্রাসা কোয়ার্টার কবরস্থান এলাকায় চটজলদি ব্যানার গুটিয়ে রাস্তায় দাড়িয়েই বক্তৃতা দিতে থাকলেন শিবিরের চশমা পরা এক নেতা। মিনিট পাঁচেক এমন অবস্থানের সময় আশেপাশে পথচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো আতঙ্ক।

এমন সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়া এক তরুণ চরম আতঙ্ক নিয়ে চালককে বললেন, ভাই সরেন। অটো (রিকশা) ঘুরান। শিবির আইতাছে। ওদের কোনো বিশ্বাস নাই। যে কোনো সময় অটো রিকশায় পেট্রোল বোমা মাইরা দিবো।

যাত্রীর কথা শেষ না হতেই দ্রুত পাশের একটি গলি দিয়ে অটোরিকশা ঢুকিয়ে দিলেন চালক। চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। জিজ্ঞেস করতে জানালেন, তার নাম কাওসার। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি।

যাত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে বললেন, শিবির খালি আকাম করে। বোমা মাইরা মানুষ মারে। মিছিল কইরা কোনো সময় যে বোমা ফাটাইয়্যা দিবো, তার ঠাহরও পাইবেন না।

একই রকম আতঙ্ক দেখা গেলো পেছনে থাকা আরো ৪ থেকে ৫টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক ও যাত্রীদের মধ্যে।

তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় কয়েক গজ দূরে চিৎকার করে বক্তব্য রাখছিলেন চশমা পরা শিবির নেতা রেজাউল। জেলা জামায়াতের গ্রেফতার হওয়া নেতা অ্যাডভোকেট মাহাবুবের মুক্তির দাবিতে তিনি উত্তেজক বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বলছিলেন, মুক্তি না দিলে কঠোর আন্দোলন। যে কোনো মূল্যে আমরা তার মুক্তি চাই।

এরপর দ্রুত ব্যানার বগলদাবা করে যার যার মতো হাওয়া হয়ে গেলেন শিবিরের নেতাকর্মীরা।

স্থানীয়রা জানান, শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কড়া পুলিশি নজরদারির কারণে ইদানিং আকুয়া মাদ্রাসা কোয়ার্টার, বাউন্ডারি রোড, বিদ্যাময়ী স্কুল এলাকাসহ কয়েকটি পয়েন্টকে ঝটিকা মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য বেছে নিয়েছে জামায়াত-শিবির।

এসব এলাকায় হঠাৎ টহল ছাড়া তেমন কোনো তৎপরতা নেই পুলিশের। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দারা প্রতিদিন শিবির আতঙ্ক ও যন্ত্রণায় ভুগছেন, এমনটিই জানালেন এলাকাবাসীরা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল করিম ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে বলেন, পরে এ বিষয়ে কথা বলবো।

বাংলাদেশ সময়: ০০২৯ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।