ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: এসএসসি পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধ দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বাংলাদেশের নাগরিকদের মূর্খ জাতিতে পরিণত করতে চান বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় শিক্ষক সমিতি আয়োজিত ‘প্রতীকী অনশন’ কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পেট্রোলবোমা, সন্ত্রাস ও হরতাল দিয়ে এসএসসি পরীক্ষাসহ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের প্রতিবাদের এই ‘প্রতীকী অনশন’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, খালেদা জিয়া নিজে পড়ালেখা কম জানেন এবং ছেলেদেরও পড়ালেখা করাতে পারেন নি। তাই বাংলাদেশের নাগরিকদের মূর্খ জাতিতে পরিণত করতে চান তিনি। দেশব্যাপী যে হত্যা ও সন্ত্রাস চলছে এর নাম রাজনীতি নয়, অপরাজনীতি। আন্দোলন করতে হলে প্রয়োজন জনগণের অংশগ্রহণ এবং সম্পৃক্ততা। কিন্তু মানুষের জানমালের ক্ষতি করে যা চলছে তাকে কোনোভাবেই রাজনীতি বলা যায় না।
তিনি বলেন, সময় এসেছে এই অপশক্তিকে রুখে দাড়ানোর। শিক্ষক সমাজসহ দেশের সব নাগরিককে এ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধী ও মানবতাবিরোধীদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা চলছে উল্লেখ করে, দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অবিলম্বে পেট্রোল বোমা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধসহ শিক্ষাক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এমন সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করা না হলে দেশের শিক্ষক সমাজ সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানান তিনি।
শিক্ষকদের এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা এবং রাষ্ট্রের মূলে আঘাত হানার মত দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডকে কখনই রাষ্ট্র সহ্য করবে না।
যারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের সন্তানদের বিদেশে লেখাপড়া করার সুযোগ থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের সন্তানদের বিদেশে লেখাপড়ার করানোর সক্ষমতা নেই। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতকে, শিক্ষাজীবনকে আপনারা নষ্ট করবেন না।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, আপনারা যদি এ লেভেল এবং ও লেভেলে পরীক্ষার্থীদের জন্য সহযোগিতা-সহমর্মিতা দেখাতে পারেন, তবে এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার্থীদের প্রতি কেন দেখাতে পারবেন না।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, এমন কোনো কর্মসূচি দেবেন না যাতে দরিদ্র মানুষেরা অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে। সবকিছু দেখে মনে হয় আপনারা বিদ্রোহ করছেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়, দরিদ্র, সাধারণ এবং খেটে খাওয়া মানুষের বিরুদ্ধে।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা এ ধরনের ধ্বংসাত্নক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন তাদের প্রতি কঠিন থেকে কঠিনতম পদক্ষেপ নিতে হবে রাষ্ট্রের। সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে হবে।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড.এএসএম মাকসুদ কামালের পরিচালনায় এই ‘প্রতীকী অনশন’ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ঢাবির প্রাণরসায়ন ও অনু প্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম সহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০০, ২০১৫