ঢাকা: দেশে বর্তমান যে সংকট চলছে, তাতে আলোচনার পথ উন্মুক্ত না হলে, পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। তাই, বল প্রয়োগ নয়, সংলাপই পরিত্রাণের একমাত্র পথ হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষে এ সব কথা বলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমীন গাজী।
রুহুল আমীন গাজী বলেন, গত প্রহসনের নির্বাচনকে (৫ জানুয়ারি-২০১৪) কেন্দ্র করে দেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট বর্তমানে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলগুলোর ডাকে দেশব্যাপী আন্দোলন চলছে।
তিনি বলেন, সরকার এই চলমান আন্দোলনকে বলপ্রয়োগ করে দমনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে, গোটা দেশ সৃষ্টি হয়েছে এক সহিংস পরিস্থিতি। চলমান এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, দেশের নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ আজ বলছেন, একমাত্র সংলাপই এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে। কিন্তু, সরকার আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে এ সংকট কাটাবে বলছে; যা তাদের বড় ভুল।
বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকারকেই দায়ী করে রুহুল আমীন বলেন, সরকার দিনদিন পরিস্থিতি ঘোলাটে করে তুলছে। ২০ দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে তুলনা করছে, যা ন্যাক্কারজনক।
এ সময় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বিএনপি চেয়ারপার্সনের অফিসে বিদ্যুৎ সংযোগ, গ্যাস, ডিশ লাইন বিচ্ছিন্ন করা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদের বাড়িতে গুলির নিন্দা জানানো হয় এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেন তিনি।
রুহুল আমীন গাজী বলেন, বর্তমান সরকার আন্দোলন দমন করতে গিয়ে গণমাধ্যমের ওপরও চড়াও হচ্ছে। গণমাধ্যমের কণ্ঠ স্তব্ধ করার জন্য নানামুখী অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। ইতোপূর্বে, সরকারের মন্ত্রীরা দুই দফায় সম্পাদক ও চ্যানেল প্রধানদের ডেকে সংবাদ নিয়ন্ত্রণের জন্য চাপ দিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী কেবল অপারেটরদের দিয়ে একুশে টিভিসহ বিভিন্ন চ্যানেলের সম্প্রচার বাধাগ্রস্ত করেছেন।
তিনি এ সময় বিএফইউজের সভাপতি শওকত মাহমুদ, সুপ্রীম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের নামে মামলা প্রত্যাহার এবং ইটিভির চেয়ারম্যান ও শিক্ষক নেতা সেলিম ভূঁইয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫