ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মাঘ ১৪৩১, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

দশদিনের রিমান্ডে মান্না

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫
দশদিনের রিমান্ডে মান্না ছবি: দিপু / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সেনাবাহিনীকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একই সঙ্গে তার আইনজীবীদের করা জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত।

এর আগে বিকেল তিনটার দিকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে প্রিজন ভ্যানে করে মান্নাকে সিএমএম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান গুলশান থানার এসআই আব্দুল বারিক।   শুনানি শেষে আদালত ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে রিমান্ড আবেদনের শুনানি করেন ঢাকা মহানগর পিপি আব্দুল্লাহ আবু, অতিরিক্ত পিপি শাহ আলম তালুকদার ও প্রসিকিউশন পুলিশের সহকারী কমিশনার মিরাস উদ্দিন।

তারা বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না ভাইবারের মাধ্যমে বৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারকে উৎখাতের জন্য ওই কাজে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদেরকে উৎসাহিত করার চেষ্টায় করেছেন। ফোনে অপর প্রান্তে যে ব্যক্তির সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন তার নাম-ঠিকানা জানার জন্য মান্নাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।  

মান্নার পক্ষে রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী আব্দুল মান্নান খান, সানাউল্লাহ মিয়া, মোহসীন মিয়া, শাহজামান ফিরোজ তুহিন।

তারা বলেন, ভাইবারে কথোপকথন তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। যে বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয় সে বিষয়ে রিমান্ডে নেওয়া নিষ্প্রয়োজন।

তবে শুনানিতে মান্নার বক্তব্য সঠিকভাবে প্রকাশ না করে এ মামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তারা।

তারা আরও বলেন, মান্না ঢাকা সিটি কর্পোরেশেনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করায় সরকার তার কাছে হেরে যাওয়ার ভয়ে এ ‘মিথ্যা মামলা’ দায়ের করেছে।

আইনজীবীদের বক্তব্য শেষে মান্না নিজেই আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, যদি রিমান্ড চাওয়া হয় মামলার তদন্তের স্বার্থে, তবে আমি বলবো, ওইদিন অনেক মানুষের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। শুধু ওই দুজনের সঙ্গেই নয়। ভাইবারে সব কথা রেকর্ড হয়নি। আমি যে কথা বলেছি, তাও সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি।

মান্না দাবি করেন, আমি বলেছি, সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কে কথা বলতে চায়, তার সঙ্গে আমি কথা বলতে পারি। এটা দোষের কি? রিমান্ডে দিয়ে কি হবে? আমি জানি না যারা আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, তারাও বিষয়টি বুঝবেন কি না।

তিনি আরও বলেন, আমি গণতান্ত্রিক অন্দোলনে বিশ্বাস করি। পেট্রোল বোমার নিন্দা করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করতে বলেছি। ছাত্রদের সংগঠিত করতে বলেছি। গত বছরের ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে তা ছিল ‘বিতর্কিত নির্বাচন’।

মান্না ‘বিতর্কিত নির্বাচন’ বলার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা প্রতিবাদে চিৎকার করে ওঠেন। আদালতের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে মান্না আবারও আদালতকে বলেন, আমি গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করি। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা আন্দোলন করছি। আমি ন্যায়বিচারের পক্ষে, তবে অহেতুক রিমান্ডে দেওয়ার পক্ষে নই।

সেনাবিদ্রোহের উসকানি দিয়ে সরকার উৎখাতের অভিযোগ গুলশান থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় মান্নাকে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ওই মামলার জের ধরেই মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে ধানমণ্ডির স্টার কাবাব রেস্তোরাঁর সামনে থেকে মান্নাকে আটক করে র‌্যাব-২।

তবে মান্নার পরিবারের অভিযোগ, সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতেই বনানীর এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। যদিও পুলিশ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫ আপডেটেড ১৬০০ ঘণ্টা

** আদালতে মান্না
** আদালতের পথে মান্না
** মান্নার ১০দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ
** ডিবি কার্যালয়ে মান্না

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ