ঢাকা: গুলশান কার্যালয়ে প্রায় সারা রাতই নির্ঘুম কাটান বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। আর এই নির্ঘুম রাতের সঙ্গী হন তার ২ ভাইয়ের স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় অবস্থানকালে কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানায়।
জানা যায়, কিছুটা রাত করে ঘুমানোর অভ্যেস থাকলেও চলমান রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতিতে গুলশান কার্যালয়ে প্রায় প্রতিটি রাতই নির্ঘুম কাটছে খালেদা জিয়ার। আবার দিনের বেলায়ও পত্রিকা পড়ে আর সঙ্গে থাকা নেতাদের সঙ্গে গল্প করেই সময় কাটান তিনি।
সূত্র জানায়, প্রতিরাতে খালেদাকে সঙ্গ দিতে গুলশান কার্যালয়ে হাজির হন তার ভাইয়ের স্ত্রীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে একটি প্রাইভেট কারে করে গুলশান কার্যালয়ে আসেন ইস্কান্দার মির্জার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা। রাতে তিনি খালেদার সঙ্গেই অবস্থান করেন। তাকে রেখে প্রাইভেট কারটি চলে যায়।
এ বিষয়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, রাতে বিএনপি চেয়ার্পাসনের দুই ভাইয়ের যেকোনো একজনের স্ত্রী তার কাছে থাকার জন্য আসেন। এটা নিয়মিতই দেখছি। দিনের বেলায় চলে যান তারা। এটি এখন নিয়মিত ঘটনা।
খালেদার কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, ম্যাডামের সঙ্গে কানিজ ফাতিমা থাকতেও পারেন। প্রতি রাতেই কেউ না কেউ আসেন ম্যাডামের কাছে।
জানা যায়, টানা ৫৩ দিন আটক থাকা খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে অবস্থান করছেন। সেখানে কোন রকমে তার থাকার ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানা যায়।
বিএনপি কার্যালয় সূত্র জানায়, ঘুম থেকে উঠে খালেদা জিয়া দিনের সবগুলো পত্রিকা মনোযোগ দিয়ে পড়েন। দিনের একটা সময় বিএনপি নেত্রী সেলিমা রহমানসহ সঙ্গে থাকা নেতাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ করেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, নিরাপত্তাকর্মী ও গৃহশ্রমিক বাদে গুলশানে কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে অবস্থান করছেন ১৭ জন নেতা ও অফিস স্টাফ। এরা হলেন নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, শিমুল বিশ্বাস, মারুফ কামাল খান সোহেল, এমএন কাইয়ুম, শিরিন সুলতানা, শাইরুল কবীর, শামসুদ্দীন দিদার প্রমূখ।
এদিকে কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া প্রায় সকল কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কারণে কার্যালয়ে থেকে বের হলেই আটকের আশঙ্কা বিরাজ করছে সকলের মধ্যে। এদের মধ্যে কার্যালয় কর্মকর্তারা গেটে এসে বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বার্তা বললেও গেটের বাইরে ভুলেও বের হন না।
এমনই এক কর্মকর্তা বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) কার্যালয়ে অবস্থান নিলেও এখান থেকে বিভিন্ন জেলা বা থানা পর্যায়ে কোন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। কারণ, জেলা, থানা কিংবা ইউনিয়ন সকল পর্যায়ের নেতারা এখন গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ ঘরে থাকতে পারেনা। যোগাযোগ করবে কিভাবে।
জানা যায়, পুত্র শোকগ্রস্ত খালেদা জিয়া মালয়েশিয়াতে থাকা সদ্য প্রয়াত সন্তান আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। কথা বলছেন নাতনীদের সঙ্গে।
খালেদা জিয়া গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়া তার গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে সেখানে থেকেই টানা অবরোধ ডাকেন তিনি। দেশে এখনো অবরোধ চলছে। সেই সঙ্গে বেশিরভাগ সময়েই থাকছে হরতাল।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৫