গুলশান থেকে: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে তল্লাশি শুরু হবে যেকোনো মুহূর্তে- এমন গুঞ্জন প্রায় সারাদিনই হয়েছে কার্যালয় ঘিরে। অন্যদিকে নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া খালেদার গুলশানের বাসাটিতে নেমে এসেছে ঘোর নিস্তব্ধতা, গিয়ে ঘুঘুর দেখাও পাওয়া গেল।
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডে ‘ফিরোজা’ নামের বাসায় থাকতেন খালেদা। ৩ জানুয়ারি থেকে তিনি ৮৬ নম্বর রোডের নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছেন।
রোববার (১ মার্চ) রাতে বাসাটির নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়।
একজন হাবিলদার ও পাঁচজন কনস্টেবল দায়িত্বে ছিলেন বলে জানান এক প্রত্যক্ষদর্শী।
তিনি জানান, রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে একটি ট্রাক বাসাটির সামনে আসে। আগে থেকেই প্রস্তুতি ছিল, তাই খুবই অল্প সময়ে পুরো ব্যারাক ট্রাকযোগে ফেরত যায়।
গুলশান থানার অপারেশন অফিসার শেখ সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, এ বাসায় এখন তিনি (খালেদা) থাকেন না, তাই নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গুলশানের বাসায় গিয়ে দেখা গেল একজন স্টাফ ফটকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ক্যামেরা দেখে তিনি দ্রুত সরে পড়েন। বাসাটির দেয়াল ঘেঁষে যে গাছটি, তার পাতায় বসে রয়েছে ঘুঘু।
নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়ায় আর আট-দশটি বাড়ির সঙ্গে এই বাসাটির তেমন পার্থক্য চোখে পড়ছে না। খালেদা জিয়ার জন্য এ বাসা থেকে নিয়মিত খাবার নিয়ে আসেন স্টাফ আবদুর রহিম।
সোমবার (২ মার্চ) গুলশানে দায়িত্বরত সাংবাদিক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সদা তৎপর থাকতে দেখা গেছে।
এমনিতেই গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে গুলশানকেন্দ্রিক ব্যস্ততা ছিল তাদের। এর মধ্যে তল্লাশির নির্দেশে সেই ব্যস্ততা আরও বেড়েছে। ‘যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কিছু হতেই পারে’- এটি মনে রেখে দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
যদিও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের কয়েকজন বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে বলছিলেন, ৪ মার্চের আগে কিছুই হবে না। খালেদা এই সময়টুকু নিরুপদ্রব থাকবেন।
অন্যদিকে গুলশান কার্যালয়ে খালেদার সঙ্গে অবস্থানকারীদের একজন বাংলানিউজকে বলেন, আইনজীবীরা আইন দেখে মন্তব্য করছেন। কিন্তু সরকার আইন মেনে চলবে- এমন গ্যারান্টি কি আছে?
তিনি বলেন, সরকার সবকিছু নিয়ম মেনে করবে না হয়তো। গ্রেফতারের জন্যতো যেকোনো সময়ই আসতে পারে। তল্লাশিতে যদিও সাক্ষী-সাবুদ রাখার নিয়ম, তাও তারা সেটি মানবে কিনা বলা যায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিএসএফ (চেয়ারপারসনস সিকিউরিটি ফোর্স) সদস্য নিজেদের প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলানিউজকে বলেন, আইন মেনে চলেন খালেদা। তার কাছে নির্দেশনা চাইতে গেলে একটা কথাই বলেন, যা হওয়ার হবে, চিন্তা করি না। আমি প্রস্তুত রয়েছি।
এই সদস্য আরও বলেন, অনিয়ম বা অবৈধ কিছু হলে প্রতিরোধের বিষয় আসবে। কিন্তু আইন মেনে সরকার যা করবে- তার সঙ্গে আমাদের বিরোধ কোনোকালেই থাকবে না। আমরা এখনো আশা করতে চাই, তারা নিয়মতান্ত্রিকতায় কাজ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘন্টা, মার্চ ০২, ২০১৫