ঢাকা: ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট (ইপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও আগামী দিনে বাংলাদেশ সরকারের কর্মসূচি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ নানা বিষয়ে ইপিকে ধারণা দেবেন তারা।
আগামী বুধবার (০৪ মার্চ) ইইউ পার্লামেন্টে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বেলজিয়ামের সংশ্লিষ্ট একটি কূটনৈতিক সূত্র বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আগামী ৪ মার্চ স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটায় ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টে পূর্বনির্ধারিত একটি বৈঠকে এ যোগ দেবেন।
ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দলের পক্ষে থাকবেন চেয়ার অব ডেলিগেটস ফর সাউথ এশিয়ান কান্ট্রিজ জিন ল্যাম্বার্ট ও ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার গ্রাফ লামসডরফ। ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের হিউম্যান রাইট্স এর সাবকমিটি মেম্বার চার্লস টেনকও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, হরতাল-অবরোধের নামে শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহতসহ বিএনপির নানা অপকর্ম তুলে ধরা হবে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদের কাছে।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রশীদ বুলু।
বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সভায় প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- প্রবীণ রাজনীতিক ইউনাইটেড কিংডম (ইউকে) আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদ সুলতান শরীফ, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন পলিন, আব্দুস সালাম, ড. আব্দুল কুদ্দুস, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদ সেলিম ও সর্ব ইউরোপীয়ান আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হাসনাত মিয়া।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট।
সেখানে বাংলাদেশের বৈদেশিক সহায়তা নিয়ন্ত্রণের নতুন আইন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীর বিচার, বিচার বহির্ভূত হত্যা, রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ বেশকিছু বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।
ওই বৈঠকে ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সফর করে যাওয়া ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সেখানে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট সদস্য থমাস নিকলেসন বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান চলমান মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন। সংখ্যালঘুর ওপর হামলা, রাজনৈতিক সহিংসতা, রাজনৈতিক নেতাসহ মানুষকে গ্রেফতার এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের ব্যাপারে অনাগ্রহের মতো ঘটনা ঘটছে।
এ ঘটনার পর পরই ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট (ইপি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে বলে জানিয়েছেন একজন কূটনীতিক।
এর আগে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টে বিএনপিকে জামায়াত পরিত্যাগের বিষয়ে প্রস্তাব গৃহীত হয়। আগের সে আহ্বানে এখনও ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট অনড় রয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফর করা চেয়ার অব ডেলিগেটস ফর সাউথ এশিয়ান কান্ট্রিজ জিন ল্যাম্বার্ট।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপ করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ল্যাম্বার্ট বলেন, তবে বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশই সিদ্ধান্ত নেবে। এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ কোনো নির্দেশনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৫