ঢাকা: কাজ হচ্ছে না খালেদা জিয়ার ডাকে। হালে পানি পাচ্ছে না তার আহবানও।
এমনকি এ নিয়ে কথা বলার জন্য বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে যোগাযোগও করা সম্ভব হচ্ছে না। সব মিলিয়ে তাই খালেদা জিয়ার এবাবের আহবানও আঁতুর ঘরেই মরতে বসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আরো এক দফা প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমিটি গঠনের ডাক দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেবার তার বরাতে আহবান জানিয়েছিলেন যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এবার একই আহবান জানালেন স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকা অপর যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ।
কিন্তু প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমি্টি গঠন ও এর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হলে রাজপথের প্রকাশ্য কর্মসূচিতে আসতে হবে বলে এই ডাক এবারও ব্যর্থ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেননা খালেদা জিয়ার ডাকে গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী টানা অবরোধ ও দফায় দফায় হরতাল কর্মসূচি পালিত হয়ে এলেও কোনো স্থানেই বিএনপি বা ২০ দলীয় নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। কার্যত যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকে চোরাগোপ্তা পেট্রোল বোমা হামলা ও দ্রুত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সটকে পড়ারই নীতি নিয়েছে তারা।
গত দুই মাসে হরতালের ফাঁকে ফাঁকে বিক্ষোভ, মিছিল ইত্যাদি কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত কোথাওই তা কার্যকরভাবে পালন করতে দেখা যায়নি।
বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমনিতেই বিএনপি ও জামায়াত ছাড়া সারাদেশে ২০ দলীয় জোটের আর সব শরিক দলের নেতাকর্মী নেই। যেখানে কমিটি আছে সেখানেও দলীয় কোন্দল ও গ্রুপিং রয়েছে চরম পর্যায়ে।
উপরন্তু প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে চিহ্নিত হয়ে পড়ার ভয় কাজ করছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মামলায় কারাগারে যাওয়া নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র।
অতীত স্মরণ করে তাই ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা নতুন করে কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না। আস্থা রাখতে পারছে না কেন্দ্রের ওপর।
এর আগে খালেদা জিয়ার পক্ষে রিজভী আহমেদ প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমিটি গঠনের ডাক দিলে কোনো কোনো জেলা ইউনিটে এ বিষয়ক তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু দলীয় কোন্দল, গ্রুপিং ও জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে তা ভেস্তে যেতেও সময় লাগেনি।
সেবার বিশেষত রাজশাহী ও রংপুর এবং বরিশাল বিভাগের জামায়াত প্রভাবিত অঞ্চলে এ বিষয়ক তৎপরতা দেখা গিয়েছিলো। গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজশাহী ইত্যাদি স্থানে এ নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকেও বসেছিলেন স্থানীয় নেতারা।
কিন্তু প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ার এবার কোনো প্রকাশ্য তৎপরতার দিকেই যেতে চাইছেন না বিএনপি বা ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।
সালাউদ্দিন আহমেদের ওই ঘোষণার পরও তাই কোনো সাড়া নেই তৃণমূলে।
দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমিটি গঠনের ডাক কেবল ঘোষণাতেই সীমাব্ধ রয়েছে। ওই ঘোষণার পর যেমন কেন্দ্র থেকে কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হযনি, তেমনি নিজেরা উদ্যোগী হয়ে কোথাও এমন কোনো কমিটিও গঠন করেনি।
এমনকি ওই ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত এ নিয়ে বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গেই কথা বলা যাচ্ছে না। সবাই আত্মগোপনে থেকে পিঠ বাঁচিয়ে চলেছেন। তাই খালেদা জিয়ার কোনো ডাকেই কোনো কাজ হচ্ছে না আর।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৫