ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুর্নবিবেচনা) আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
বুধবার (০৪ মার্চ) পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কামারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, কামারুজ্জামানের রায়ের রিভিউ আবেদনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেই আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করা হবে।
‘তার সঙ্গে রিভিউ আবেদনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে,’—যোগ করেন তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, আপিল বিভাগের অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে যেসব সুযোগ-সুবিধা ও সময় দেওয়া হয়, আমরা আশা করবো, কামারুজ্জামানের রিভিউয়ের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল বলেন, ‘কামারুজ্জামান শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হলেও মানসিকভাবে বেশ দৃঢ় রয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে রায় দেওয়া হয়েছে তাতে তিনি ন্যায় বিচার পাননি’।
‘তবে রিভিউ আবেদনে ন্যায়বিচার পাবেন বলে বেশ আশাবাদী কামারুজ্জামান,’—যোগ করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবী।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে যান তার পাঁচ আইনজীবী।
এ সময় অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন অন্য চার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি দেখা করতে গেলে আইনজীবীদের রিভিউ করতে বলেন একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামান। রিভিউয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেই বুধবার আইনজীবীরা কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে যান।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের সঙ্গে কারাগারে দেখা করে এসেছেন তার পরিবারের সদস্যরাও।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমান প্রধান বিচারপতি) এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির বেঞ্চ কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ তিন বিচারপতি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেন।
পরে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আইজিপি (প্রিজন) এর বরাবরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠান।
এরপর কারাগারে কামারুজ্জামানকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।
গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে চূড়ান্ত রায় সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা কমান্ডার কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫, আপডেটেড: ১২১৬ ঘণ্টা
** কারাগারে কামারুজ্জামানের পাঁচ আইনজীবী