ঢাকা: ২০৫০ সাল পর্যন্ত বিএনপিকে ধ্বংস করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ।
তিনি এও বলেন, বড় দুটি দলের কেউ কাউকে ধ্বংস করতে পারবে না।
শনিবার (০৭ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এনটিভির চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালুর মুক্তি দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে মোসাদ্দেক আলী ফালু মুক্তি পরিষদ।
এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘একজনের কথার সঙ্গে দ্বিমত থাকতে পারে, এতে অন্যজন প্রতিপক্ষ হতে পারে কিন্তু শত্রু নয়। বর্তমান রাজনীতি দেখে মনে হচ্ছে বিরোধী দল প্রতিপক্ষ নয়, শত্রু। কাজেই শত্রুকে ধ্বংসকে করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি এদেশের তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত। একদল অন্য দলকে আগেও ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এখন এক দল অন্য দলকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু হচ্ছে না তো। সম্ভব নয়। ’
এমাজউদ্দীন বলেন, ‘আগামী ৫০ সাল অর্থাৎ ২০৫০ সাল নাগাদ রাজনীতিতে এ দুটি দলই প্রভাব বিস্তার করতে থাকবে। কিন্তু ধ্বংস করা সম্ভব হবে না। আর যেহেতু দুটি দলই বিদ্যমান থাকবে তাহলে একটু জ্ঞান, প্রজ্ঞার সঙ্গে চলতে হবে। আর প্রজ্ঞা বা জ্ঞান হচ্ছে দুটি দলের সহাবস্থানে চলা। এজন্য সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা ডেভেলপ করতেই হবে। এছাড়া কোনো পথ নেই। ’
‘দে মাস্ট লিভ টুগেদার। আর এমন যদি চলতে থাকে তারা বাধ্য হবে একসঙ্গে চলতে। হয়তো দেখার ভাগ্য হবে কিনা জানি না’ যোগ করেন তিনি।
এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরো বলেন, আমার বয়স এখন ৮২ চলছে। ঢিল মারা তো দূরের কথা, আমি তা পারিই না। দুটো নাতি-নাতনি আছে, কখনো তাদের দুটো চুল ধরেও টানতে পারিনি। মন থেকেই আসে না। এভাবেই ছোট থেকে বড় হয়েছি। অথচ আমার নামেও মামলা দেওয়া হয়েছে। যদিও এখন পর্যন্ত সেটা তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।
মোসাদ্দেক আলী ফালুর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দ্যেশে তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৭৮ হাজার মানুষের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। অনেকেই কারাগারে আছেন। এদের কী একটু করুণা করা যায় না। এরা কী এদেশের মানুষ নন। ফালুর মতো মানুষ যারা আছেন তারা কারাগারে আটক থাকার মানুষ নয়। তাদের স্বাধীনভাবে বাঁচার সুযোগ দিন। একটু চিন্তা করেন দেখেন কত সম্ভাবনাময় এ দেশ।
তিনি আরো বলেন, যদি আমাদের নেতারা একটু সহিষ্ণু হয়, একটু সহমর্মী হয়ে একে অপরের পাশে থাকেন, তবে এদেশ যে উন্নতির কোথায় যাবে তা কল্পনাও করা যাবেনা।
আলোচনা সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান জিন্নাতুন্নেসা তাহমিনা বেগম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা অবিলম্বে মোসাদ্দেক আলী ফালুর মক্তির জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা বলেন, ফালু শুধু একজন গণমান্য উদ্যোক্তা নন, তিনি একজন সমাজসেবকও। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি। কাজেই তার মতো ব্যক্তিত্ব কারাগারে আটক থাকতে পারেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৫