জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: বিএনপিকে ধ্বংস করতে আওয়ামী লীগ নয়, খালেদা-তারেকই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
সোমবার (৩০ মার্চ) রাতে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া গুলশানের অন্ধকারের কার্যালয়ে বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চক্রান্ত করছেন। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান, আল-কায়দা ও আইএস’র সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো পার্থক্য নেই।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে ধ্বংস করতে কাউকে লাগবে না, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াই বিএনপির ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। দেশের জনগণকে আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা শেখ হাসিনার আলোকিত বাংলাদেশ চান, নাকি খালেদা জিয়ার অন্ধকার ও হাওয়া ভবনের দুঃশাসনে ফিরে যেতে চান?
বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে থাইল্যান্ডের মতো বাংলাদেশে সেনা শাসন বা মার্শাল ল’ থাকতো। শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে আজ দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, মানুষের বাক-স্বাধীনতা রয়েছে। গণতন্ত্রের বিকল্প শুধু গণতন্ত্র, এর কোনো বিকল্প নেই। গণতন্ত্রের মতো উত্তম ব্যবস্থা বিশ্বে কোথাও নেই।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের বদলে আজ দেশে সামরিক শাসন থাকলে কেউ-ই আমরা কথা বলতে পারতাম না, খালেদা জিয়াও ৮৩ দিন ধরে অকার্যকর হরতাল-অবরোধ করতে পারতেন না। শেখ হাসিনার জীবনকে বাজি রেখে আপোষহীন নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ জঙ্গিবাদমুক্ত হয়েছে। জঙ্গিবাদ দমনে একবিন্দু আপোষ করেননি হাসিনা। তিনি আলোকিত বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন। আর খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ ছিলো দুঃশাসনের, অন্ধকারের বাংলাদেশ।
‘দেশবাসীকেই আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা আলোকিত বাংলাদেশে থাকবেন, নাকি অন্ধকার ও হাওয়া ভবনের দুঃশাসনের বাংলাদেশে ফিরে যাবেন। দেশের জনগণ ভুল করলে আবারও আলোকিত বাংলাদেশ হারিয়ে যাবে’, যোগ করেন মন্ত্রী।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশে আজ জামায়াতের জঙ্গি শাসন আর হাওয়া ভবনের দুঃশাসন-দুর্নীতি নেই। এ দেশের স্রষ্টা হচ্ছি আমরা। মায়ের সমান এই বাংলাদেশ। আমরা জীবন দিয়ে দেশকে ভালোবাসি বলেই দেশ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট দু’মাস ধরে কী করছে? মানুষকে পেট্টোল বোমা মেরে, গায়ে পেট্রোল ছিটিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করছে। তালেবান, আল-কায়দা ও আইএসের সঙ্গে এই খালেদা জিয়ার কী পার্থক্য রয়েছে? ক্ষমতায় থাকতেও এরা ২১ আগস্টে গ্রেনেড মেরে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো, ২৪ জনকে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে হাওয়া ভবন ও তারেক জিয়া জড়িত।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না এবং জনগণকে ভয় পান বলেই নির্বাচনে আসেননি। দেশের জনগণ আজ এই জঙ্গিবাদী নেত্রীকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতি হচ্ছে ডবল স্ট্যান্ডার্ড। বিএনপি এখন দু’জায়গার নির্দেশে চলে। এক গুলশান থেকে, আরেকটি লন্ডন থেকে। বিএনপি এখন আন্ডারগ্রাউন্ড দলে পরিণত হয়েছে।
খালেদাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সাহস থাকলে মাঠে আসুন। ঘরে বসে লড়াই হয় না। আগামী ২০১৯ সালে নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে, ওই নির্বাচনেও দেশের জনগণ আবারও শেখ হাসিনাকে পুননির্বাচিত করবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বছরের সাফল্যের কথা তুলে ধরে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একদিন বাংলাদেশে স্লোগান ছিল গ্রামে ডাক্তার চাই। শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এখন প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে ডাক্তার আছে। তরুণ চিকিৎসকরা নিজের জন্মভূমিতে থেকে মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। বরিশালসহ ছয়টি জেলার হাসপাতালে আইসিইউ ও সিসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। আগামী চার বছরে ইনশাল্লাহ প্রতিটি জেলার হাসপাতালে সিসিইউ ইউনিট হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আরও দুটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ অচিরেই একটি মডেলে পরিণত হবে।
এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, একাত্তরে মানুষকে গণহত্যা করেছিল হানাদার বাহিনী, আজ খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার উম্মত্ত খেলায় নেমেছে। আগুন সন্ত্রাসের এই নেত্রী গুলশানের কার্যালয়কে ষড়যন্ত্রের প্রাসাদে পরিণত করেছেন। দেশকে ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছেন বিএনপি নেত্রী।
কিন্তু দেশের জনগণ শুধু নয়, বিশ্ববাসীও খালেদা জিয়ার সন্ত্রাস-নাশকতা ও জঙ্গিবাদী অশুভ তৎপরতাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৫