ঢাকা: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী চূড়ান্ত। তবে এখনও দলের মেয়র প্রার্থীদের পক্ষে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।
দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীদের উপর মহানগরের নেতাকর্মীদের একটি অংশ নাখোশ। ফলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর সরব তৎপরতা লক্ষ্যণীয় ওঠেনি বলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
তবে এই মুহূর্তে মেয়র প্রার্থীর চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়েই বেশি ব্যস্ত মহানগরের নেতাকর্মীরা। দলের একক কাউন্সিলর প্রার্থী এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। নেতারা অনেকেই নিজেদের পছন্দের কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে দলীয় সমর্থন আদায়েই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
আগামী ২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত রোববার ছিলো মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই দলের ৪/৫ জন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কোনো কোনো ওয়ার্ডে রযেছেন ৭/৮জন প্রার্থী।
আগামী ৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এই সময়ের মধ্যে দল সমর্থিত একজনকে রেখে বাকিদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
একক প্রার্থী নির্ধারণের জন্য ঢাকা সিটির দুই অংশে ১৫টি কমিটি (সংসদীয় এলাকা ধরে) গঠন করা হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় নেতা, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরের নেতারা এ কমিটিতে রয়েছেন। মহানগরের অধিকাংশ নেতা ও স্থানীয় এমপিরা কাউন্সিলর প্রার্থী ঠিক করার কাজে। ফলে মেয়র প্রার্থীর পক্ষে তৎপরতা কম। আবার অনেকেই কৌশলে দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন বলেও জানা যায়।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক। সরাসরি দলের রাজনীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। দলের বাইরে থেকে তাকে প্রার্থী করায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কিছুটা গাছাড়া ভাব রয়েছে।
উত্তর সিটি করপোরেশনে মহানগর আওয়ামী লীগের যারা প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন তাদের কেউ কেউ এখনও দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সরব হয়ে মাঠে নামেননি।
এদিকে দলের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না থাকায় আনিসুল হকের নিজস্ব কর্মীও নেই। তাকে পুরোপুরি আওয়ামী লীগের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দ্বিধা বা গাছাড়া ভাব থাকলেও দ্রুতই তা কেটে যাবে বলে জানান ওই নেতারা।
এদিকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে ঢাকা মহানগরের নেতা সাঈদ খোকন। এখানে ঢাকা মহানগরের আরেক নেতা স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। দলের সমর্থন না পাওয়ায় তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি প্রভাবশালী অংশ হাজী সেলিমের পক্ষে ছিলেন। তারা এখন এক ধরনের দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন বলে ওই নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ঠিক করে দিয়েছেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সিদ্ধান্ত মানতে হলে দলের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে হবে। বসে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
মহানগর আওয়ামী লীগের অপর এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্যে পৌঁছাতে আওয়ামী লীগের কঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে।
বাংলাদেশ সময় ১৫১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৫