ঢাকা: অবশেষে ঘরে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রোববার দুই দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে গেলে যদি আর নিজের কার্যালয়ে ফিরতে না পারেন তাহলে ভাড়া বাসা ‘ফিরোজাতে’ই ফিরবেন তিনি।
গত ৩ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া অবস্থান করছেন গুলশান ২ এর ৮৬ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়িতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে। সেখান থেকে ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাড়িটি খুব একটা দূরে নয়। কিন্তু নিজের ডাকা অবরোধ, দফায় দফায় হরতাল আর নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে গত ৩ মাস ধরে কার্যালয়েই থেকে গেছেন তিনি।
এর মাঝে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
কিন্তু তারপরও নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে আদালতে হাজিরা থেকে বিরত খাকেন খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মোট ৬৩ কর্মদিবসের মধ্যে মাত্র ৭ দিন আদালতে উপস্থিত হন খালেদা। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও গত ৪ মার্চ তিনি আদালতে অনুপস্থিত থাকেন।
এমন পরিস্থিতিতে তাই রোববার আদালতে হাজিরার বিকল্প নেই খালেদা জিয়ার সামনে। কেননা এর পর আদালতের নির্দেশ না মানার অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের শক্ত প্রেক্ষাপট তৈরি হবে।
কিন্তু দলীয় সূত্র বলছে, দল পরিচালনার স্বার্থেই আপাতত গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে চান বিএনপি প্রধান। তাই রোববার আদালতে হাজিরা দেবেন তিনি। সেখান থেকে প্রয়োজনে তার ভাড়া বাসায় ফিরে যাওয়ারও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি।
তবে বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়া রোববার আদৌ আদালতে যাবেন কি না তা নির্ধারিত হবে শনিবার রাতে। রোববার সকালের পরিস্থিতিও খালেদার আদালতে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্তে একটা বড় ভূমিকা রাখবে। নিজের নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হলেই কেবল তিনি আদালতে যাবেন।
দলীয় সূত্র আরো বলছে, খালেদা জিয়া যে নিরাপত্তার কথা বলে দিনের পর দিন আদালতে গরহাজির থাকছেন, সেই নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে রেখেই খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে ফিরতে নাও দেওয়া হতে পারে। কূটনৈতিক জোনে হওয়ায় সেখান থেকে রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে দেওয়ার একটা তাগাদাও আছে বিভিন্ন মহলের। আর এদিকে রোববার আদালতে হাজির হওয়ার একটা বাধ্যবাধকতাও তৈরি হয়েছে।
তাই একবার কার্যালয় ছাড়লে আর যে ফেরার সুযোগ নাও হতে পারে তা ভালোভাবেই জানেন খালেদা জিয়া। তাই নিজের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’তে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেছেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে ‘ফিরোজা’। খালেদা জিয়া বসবাস না করায় গত ১ মার্চ সেখান থেকে পুলিশি প্রহরা সরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো। এখন প্রয়োজনে ফের পুলিশ প্রহরা বসাতে তৈরি আছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাহলে কি খালেদা জিয়া ৩ মাস পর ঘরে ফিরছেন?
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৫