ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

আবারও নয়াপল্টনে পুলিশ

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৫
আবারও নয়াপল্টনে পুলিশ ফাইল ফটো

ঢাকা: শুক্রবার (৩ এপ্রিল) ভোর থেকে শনিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৩৬ ঘণ্টা নয়াপল্টন এলাকা অনেকটা পুলিশশূন্য ছিল। শনিবার সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কেবল বিজয়নগর ও ফকিরাপুল এলাকায় একটি করে গাড়ি নিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কাজ করছিলেন।

তবে, সন্ধ্যার পর থেকে আবারও নয়াপল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনের নেতৃত্বে প্রায় তিন মাস পর দলের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের মূল ফটকের তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশের পরই অবস্থান নিতে থাকেন পুলিশ সদস্যরা।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে প্রবেশ করার পরপরই কার্যালয়ের পশ্চিম পার্শ্বের হোটেল মিডওয়ের সামনে পল্টন থানার কয়েকজন উপ-পরিদর্শকসহ ১২-১৫ জন পুলিশ সদস্য অবস্থান নেন। তার কয়েক গজ দূরে রাখা হয় পুলিশের গাড়িও।

তবে, কেন তাদের এ অবস্থান- এ বিষয়ে বেশি কথা বলতে চাইছেন না পুলিশ কর্মকর্তারা।

উপ-পরিদর্শক হানিফের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তিনি বাংলানিউজকে জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন।

এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলার জন্য মতিঝিল জোনের উপ-কমিশনারের (ডিসি) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।

কিন্তু কার্যালয় এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেও ডিসিকে পাওয়া যায়নি।

দীর্ঘ তিন মাস তালাবদ্ধ থাকার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন আসাদুল করিম শাহীনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

সিটি নির্বাচনকে সামনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড বজায় রাখার নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যায় পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপরই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশের উদ্যোগ নেয় বিএনপি।

সর্বশেষ গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তি সামনে রেখে চলমান বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে ৩ জানুয়ারি রাতে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে আটক করা হয় বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ‍আহমেদকে। এরপর থেকেই তালা বন্ধ ছিলো নয়াপল্টনের কার্যালয়।

সিটি নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ডের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জানায় বিএনপি। এর পর শুক্রবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যায় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে তালাবদ্ধ থাকায় তখন ঢুকতে পারেননি বিএনপি নেতারা। এরপর শনিবার বিকেলে পুলিশের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খোলার চেষ্টা করেন আসাদুল করিম শাহীন। তবে তালাটি না খোলায় হ্যাসকো ব্লেড দিয়ে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীরা।

এ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে ছিলো ভুতুড়ে পরিবেশ।

উপস্থিত সাংবাদিকদের আসাদুল করিম শাহীন বলেন, মূল গেটে অন্য একটি তালা থাকায় ভেঙে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে হলো তাদের।

তিনি এ সময় সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চায় বাধা না দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আশা করি সরকার আর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের অবস্থান নিতে বাধার সৃষ্টি করবে না। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা নির্বিঘ্ন রাখতেও সহায়তা করবে তারা।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।