ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

ভুতুড়ে পরিবেশ নয়াপল্টন কার্যালয়ে

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৫
ভুতুড়ে পরিবেশ নয়াপল্টন কার্যালয়ে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পানি-গ্যাস ও বিদ্যুৎ না থাকায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিরাজ করছে ভুতুড়ে পরিবেশ।

টানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় দলটির সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনসহ মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা-কর্মী ও অফিস স্টাফ তালা ভেঙে প্রবেশ করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।



এ সময় ৬ তলা বিশিষ্ট ভবনটির বিভিন্ন তলা ও কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, সেখানে গ্যাস-বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

দীর্ঘদিন কার্যালয়টিতে মানুষের আনা-গোনা না থাকায় ফ্লোর, চেয়ার-টেবিল, ফাইল কেবিনেট, কম্পিউটার, বিছানাপত্র, দরজা-জানালা, বাথ-কিচেনরুমে ব্যবহার্য জিনিসপত্র, লাইট-ফ্যান, দরজা-জানালার পর্দা, কাগজপত্র, আলমারি, প্রিন্টার মেশিন, এসি, শব্দযন্ত্র, টেলিভিশন, দেওয়ালে টাঙানো জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আলোকচিত্রসহ সব কিছুর ওপরে জমেছে ধূলার পুরু আস্তরণ।  

নয়াপল্টনের এই ভবনটির বিভিন্ন তলায় বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়বাদী ছাত্রদল, যুবদল, মহিলাদল, কৃষকদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দল, তাঁতীদল, মৎসজীবীদল, শ্রমিকদল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) ও  মুক্তিযোদ্ধা দলেরও আলাদা আলাদা অফিস কক্ষ রয়েছে।

গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় এসব অফিসের অবস্থাও একই রকম।

শনিবার রাত ৮টার দিকে নয়াপল্টন কার্যালয়ে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবক দলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন মিজান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কার্যালয়ের সবগুলো তলা ও কক্ষ ঘুরে দেখেছি কোথাও গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির লাইন নেই।

এদিকে নয়াপল্টন কার্যালয়ে অবস্থানরত বিএনপি নেতা ও অফিসস্টাফরা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশেই কার্যালয়ে ঢুকেছেন তারা।

কার্যালয়ে ঢোকার আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের উপকমিশর (ডিসি) আনোয়ার হোসেন ও পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপও হয়েছে তাদের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন বাংলানিউজকে বলেন, এখানে আসার ব্যাপারটা ম্যাডাম জানেন। তার নির্দেশেই এখানে এসেছি। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে।

হঠাৎ করে কার্যালয়ে ঢোকার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এর প্রধান কার্যালয় বন্ধ থাকবে তা তো হয় না।

তা ছাড়া গত তিন মাস আমাদের অফিস স্টাফরা বেতন পায় না। তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তাদের বেতনাদি বুঝিয়ে দেওয়া এবং দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্যই আমরা কার্যালয়ে এসেছি।

এদিকে গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি না থাকলেও শনিবার সন্ধ্যায় কার্যালয়ে প্রবেশ করা নেতা-কর্মীরা সেখানে রাতযাপন করতে চান। তাৎক্ষণিকভাবে জেনারেটর চালিয়ে অথবা মোমের আলোয় সারতে চান প্রাথমিক কাজ।

তবে এখনো তাদের মধ্যে পুলিশি ধরপাকড়ের আতঙ্ক কাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, এখান থেকে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে আটক করা হয়েছে ১৫৪ জন নেতা-কর্মীকে। সে কারণে এক প্রকার আতঙ্ক নিয়েই এখানে থাকবে হবে আমাদের।

৩ জানুয়ারি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকে কার্যালয় থেকে আটক করে হাসপাতালে পাঠিয়ে এর মূল ফটকে তালা মেরে দেয় পুলিশ।

টানা ৯০ দিন তালাবদ্ধ থাকার পর শুক্রবার (৩ এপ্রিল) নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে সব পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৫

তিন মাস পর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতারা
** আবারও নয়াপল্টনে পুলিশ
** নয়াপল্টনে বিএনপি নেতারা
** কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাচ্ছেন বিএনপি নেতারা
** ঢাকা-চট্টগ্রামে মহাসমাবেশ করবেন খালেদা
** পুলিশের নির্দেশ পেলেই পল্টন কার্যালয়ে ঢুকবে বিএনপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।