ঢাকা: আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) উত্তর নির্বাচনের প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর শুরু হয়ে গেছে ভোটের হিসাব-নিকাষ। এ নির্বাচনে মোট ১৬ জন প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াই হবে আনিসুল হকের সঙ্গে তাবিথ আউয়াল ও মাহি বি চৌধুরীর।
ডিসিসি উত্তরের বাসিন্দারা বলছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন নির্দলীয় হলেও ভোটের রাজনীতিতে নির্বাচন দলীয় সমর্থনের বাইরে নয়। আসন্ন সিটি নির্বাচনেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি।
উত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হককে। আর বিএনপির সমর্থন দিয়েছে আরেক ব্যবসায়ী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে। তাই ভোটের রাজনীতিতে একটা বিভক্তি ইতিমধ্যেই সৃষ্টি হয়ে গেছে। ভোটাররাও অনেকটা সিলেক্ট করে নিয়েছেন তাদের পছন্দের প্রার্থীকে।
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা যে আনিসুল হককেই ভোট দেবেন এ আর বলা দরকার হয় না। কেননা, শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি সারাহ বেগম কবরী তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় আনিসুল হকের পথ আরো সুগম হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
সব কিছু বিবেচনায় আওয়ামী লীগের ভোট আনিসুল হক ছাড়া বহিঃশিবিরে যাওয়ার আর কোনো সুযোগই থাকলো না।
এদিকে, বাম ভোটগুলোও বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত। কেননা, এ নির্বাচনে গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, যুব ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নাদের চৌধুরী ভোটে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু তাদের ভোট তেমন প্রভাব ফেলবে না বলেই ধারণা সাধারণ নগরবাসীর।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির বাহাউদ্দীন আহমেদ বাবুলেরও তেমন ভোট নেই।
বাকি থাকেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহি বি চৌধুরী। বিকল্প ধারা বাংলাদেশের এই নেতা শুধু ঢাকাবাসী নয়, দেশবাসীর কাছেই পরিচ্ছন্ন ইমেজের। এছাড়া বিএনপির দলছুটরাও তার পক্ষে যদি কাজ করে তবে ভোটারদের খুব কাছাকাছিই যেতে পারবেন তিনি। সেক্ষেত্রে তরুণ ভোটাদের, বিশেষ করে যারা প্রগতিশীল, তাদের সমর্থন আদায় করতে পারলে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন মাহি। এছাড়া আওয়ামী লীগ বিরোধীদের একটা অংশও মাহিকে সমর্থন দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিএনপির সমর্থন পাওয়ায় তাবিথ আউয়ালকেই বেছে নেবে ২০ দলীয় জোটের শরিকরা। সবচেয়ে বড় বিষয় জামায়াতের ভোটও তাবিথের পক্ষেই যাবে।
সবমিলিয়ে আনিসুল হকের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তাবিথ ও মাহির সঙ্গে।
পশ্চিম আগারগাঁওয়ের মুদি দোকানি সোলাইমান হোসেন বলেন, আনিসুল হক ভালো মানুষ। এছাড়া ব্যবসায়ীদের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছেন।
তার মতে, আনিসুল হককে বড় ব্যবসায়ীরা না হলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সমর্থন দেবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের ছাত্র পলাশ রায় বলেন, উত্তরের প্রার্থীদের মধ্যে আনিসুল হক ক্লিন ইমেজের মানুষ। এছাড়া তিনি আগে থেকেই ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। তাই তাকে পছন্দ করতে পারেন ভোটাররা। তবে আনিসুল হককে তাবিথ আউয়াল ও মাহি বি চৌধুরীকেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বিবেচনা করে এগুতো হবে। কেননা, তাবিথের আছে বিএনপির সমর্থন আর মাহির ভরসা তরুণ ভোটার।
৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে ডিসিসি উত্তর গঠিত। এ সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ২৪ হাজার ৭০১ জন ও নারী ভোটার ১১ লাখ ২০ হাজার ৬৭৪ জন।
আগামী ২৮ এপ্রিল ডিসিসি উত্তর নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।
** খোকন চায় ইলিশ, আনিসুল হক টেবিল ঘড়ি
** তিন সিটির প্রার্থীরা প্রতীক পাচ্ছেন শুক্রবার
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫
ইইউডি/এসআই