ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের জন্য ২০ মেয়র প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সকালে মহানগর নাট্যমঞ্চে স্থাপিত দক্ষিণের নির্বাচনী কার্যালয়ে এ প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
মেয়র পদে ২০ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকন পেয়েছেন ইলিশ প্রতীক, আর বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাস পেয়েছেন মগ প্রতীক।
এছাড়া, জাতীয় পার্টি সমর্থিত হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনকে সোফা প্রতীক, চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ আব্দুর রহমানকে ফ্লাস্ক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনকে কমলালেবু, আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিকে আংটি, সিপিবি-বাসদ সমর্থিত প্রার্থী বজলুর রশিদ ফিরোজকে টেবিল, আ স ম আবদুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সমর্থিত আব্দুল খালেককে কেক, ভাড়াটিয়া আন্দোলন নেতা বাহারানে সুলতান বাহারকে শার্ট, সাংবাদিক দিলীপ ভদ্রকে হাতি, সাংবাদিক আয়াতুল্লাহকে লাউ, অ্যাডভোকেট আউয়ুব হোসেনকে জাহাজ, এএসএম আকরামকে ক্রিকেট ব্যাট এবং শহীদুল ইসলামকে বাস প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ইলিশ মাছ প্রতীকের জন্য আবেদন করেছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন। তবে এই প্রতীক চেয়েছিলেন আরও ছয় জন প্রার্থী। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পছন্দের প্রতীক ছিল হাতি। একই প্রতীকের জন্য আরও ৬ জন প্রার্থী আবেদন করে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘হাতি ও মাছ প্রতীকে পৃথক পৃথকভাবে ছয়জন আবেদন করেছেন। কিন্তু আমরা এই প্রতীক একজন প্রার্থীকে বরাদ্দ দিতে পারবো। তবে আপনারা সমঝোতার মাধ্যমে এই প্রতীক বরাদ্দ নিতে পারবেন। আপনারা সমঝোতা করুন কে হাতি ও মাছ মার্কা নেবেন। ’
এর পরে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে শুরু হয় সমঝোতা। এ সময় সাঈদ খোকনসহ অা’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, ও সদস্য সুজিত রায় নন্দী উপস্থিত ছিলেন।
সাঈদ খোকন সমঝোতার সময় মাছ প্রতীক পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মাছ প্রতীকের সঙ্গে আমার আবেগ জড়িত। আমার প্রয়াত পিতা এই মাছ প্রতীকে ঢাকার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই আপনারা যদি আমাকে মাছ প্রতীকটা ছেড়ে দেন তাহলে চির কৃতজ্ঞ থাকবো। ’
এরপর একে একে চার জন প্রার্থী মাছ মার্কা ছেড়ে অন্য মার্কার জন্য আবেদন করেন। তবে সবাই মাছ প্রতীক ছাড়লেও নাছোড়বান্দা ছিলেন আখতারুজ্জামান আয়াতুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমি মাছ প্রতীক ছাড়া অন্য প্রতীক নেব না। দরকার হয় এর জন্য আমি লটারি করবো। ’
এর পরে সাঈদ খোকনের সমর্থকেরা আয়াতুল্লাহকে মাছ প্রতীক ছেড়ে দিতে বলেন, এতেও রাজি হননি আয়াতুল্লাহ। অনেকে আবার আয়াতুল্লাহর কাছে হাতজোড় করে বলেন, ‘আপনি সাঈদ ভাইকে মাছ প্রতীক ছেড়ে দিন। লটারি পর্যন্ত গড়াবেন না, এটা সাঈদ ভাইয়ের পিতা হানিফের প্রতীক। ’
এর আধা ঘণ্টা পরে আয়াতুল্লাহ মাছ প্রতীক সাঈদ খোকনকে ছেড়ে দেন। আয়াতুল্লাহ বলেন, সবাই হাত জোড় করে বলছে তাই মাছ প্রতীক ছেড়ে দিলাম। ’ এভাবে কোনো লটারি ছাড়াই মাছ প্রতীক পান খোকন।
তবে মির্জা আব্বাস পছন্দের প্রতীক বরাদ্দ পেতে ব্যর্থ হন। তার পছন্দের প্রতীক ছিল হাতি। কিন্তু ছয় জন প্রার্থীই হাতির জন্য নাছোড়বান্দা ছিল। এর পর মির্জা আব্বাসের পক্ষে অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া হাতির বদলে অতিরিক্ত প্রতীক হিসেবে মগের আবেদন করেন। এই প্রতীকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় মগ প্রতীক পান আব্বাস।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫
এসইউজে/এইচএ/