ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

হত্যাকারীদের সমর্থন দেবে না সচেতন মানুষ

স্পেশ‍াল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫
হত্যাকারীদের সমর্থন দেবে না সচেতন মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হ‍াসিনা

ঢাকা: শিক্ষিত-সচেতন মানুষ কখনোই যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তাদের সমর্থন দিতে পারে না, ভোট দিতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।



প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন যারা বিবেকবান, শিক্ষিত, সচেতন, তারা কীভাবে বিএনপি-জামায়াতকে সমর্থন দেবে, ভোট দেবে। খালেদা জিয়া চরমভাবে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। তার শিক্ষা হয়েছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে আন্দোলন হয় না।

এসময় তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি-জামায়াত আন্দোলনের নামে এত মানুষে পুড়িয়ে ‍মারলো! কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে কোনো কথা বলতে শুনিনি। এই সংগঠনগুলো নিশ্চুপ কেন।

আসলে এ সংগঠনগুলো এক ধরনের সুবিধাবাদী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আন্দোলনের নামে যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, পুড়িয়ে মারা হুকুম দিয়েছে, অস্ত্রের যোগান দিয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যখন যাকে যেখানে পাওয়া যাবে তখনই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, যেন কেউ ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সহিংসতা করেছেন, জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন, অপরাধ করেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন তাদের নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া অব্যাহত রাখা হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি, এটা অব্যাহত থাকবে। ২০১৩ সালেও তারা আন্দোলনের নামে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। তখন ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এটা ভুল হয়েছে। অতীতের মতো আর ভুল হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। তারা যে এখানেই থেমে যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। তারা দেশের ক্ষতি করতে পারে, অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারে। বাংলাদেশ যখন বিশ্বে সুনাম অর্জন করতে শুরু করেছে, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, এসময় খালেদা জিয়া এই জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ পুড়িয়ে মারার ধ্বংসাত্বক কর্মকাণ্ড শুরু করলেন।

ভবিষ্যতে কেউ যাতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে না পারে, এজন্য যারা সহিংসতা করেছে, যারা হুকুম দিয়েছে, অর্থ দিয়েছে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার প্রশ্ন উনি কী পেলেন! তিনি আদালতে যাবেন না, আত্মসমর্পণ করবেন না, সরকারের পতন না ঘটিয়ে বাড়ি ফিরবেন না। সেই তো আদালতে যেতে হলো, আত্মসমর্পণ করতে হলো। উনি চরমভাবে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। যারা ব্যর্থ হয়, জনগণ তাদের পাশে থাকে না, সমর্থন দেয় না। আর মানুষ পুড়িয়ে মারলে আন্দোলন হয় না। এই শিক্ষা উনার হয়েছে। এই শিক্ষা নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যাদের এতটুকু শিক্ষা রয়েছে, বিবেক রয়েছে তারা কীভাবে বিএনপি-জামায়াতকে ভোট দিতে পারেন! যে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিবাদী কাজ করে তাদের কীভাবে মানুষ সমর্থন দিতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১শ’ ৫০ জনের মতো মানুষ পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আর দেশে বিদেশে এত মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, কেউ কোনো কথা বললো না। অথচ মানবাধিকার সংগঠনগুলোর জন্য অস্থির থাকতে হয়।

২০১৩ সালের মে মাসে হেফাজতের তাণ্ডবের পর তারা রিপোর্ট দিলো, এতো-অতোজনকে হত্যা করা হয়েছে। তালিকা প্রকাশ করলো। যাদের নাম প্রকাশ করা হলো, তাদের কেউ কেউ বললো আমরা তো বেঁচে রয়েছি। কিন্তু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে এত মানুষ মারা হলো, তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কোনো কথা নেই। আসলে এসব সংগঠন সুবিধাবাদী।

উপদেষ্টা পরিষদের এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচটি ইমাম, দূর্গা দাস ভট্টাচার্য, ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৫‍/আপডেট: ২৩৫৭ ঘণ্টা
এসকে/এটি/এএ/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।