ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে ‘সহস্র নাগরিক সমাজ’ নামে একটি কমিটি গঠন করতে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার (১০ এপ্রিল) রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলীয় উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিকসহ দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ‘সহস্র নাগরিক সমাজ’ গঠন করার বিষয়ে এসময় প্রস্তাব করা হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
উপদেষ্টা পরিষদের এ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে এ কমিটি গঠন করা হবে বলে বৈঠকে এসময় নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে ‘ঢাকা নাগরিক সমাজ’ নামে একটি কমিটি গঠন করে প্রার্থীদের প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে শত নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে, এসময় ‘সহস্র নাগরিক সমাজ’ বিএনপি’র ওই কমিটির বিপরীতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে অংশ নেবে বলে উল্লেখ করা হয়।
নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অংশ নিলে, ‘সহস্র নাগরিক সমাজের’ পক্ষ থেকে গত তিন মাসে তিনি আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা চালিয়েছেন, পেট্রোল বোমার আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন, তার সব তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে বলে বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের কেউ কেউ মত দেন।
মানুষকে এ সহিংসতার বিরুদ্ধে ও শান্তির পক্ষে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে বলেও তারা জানান।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান বলে সূত্র জানায়।
তিনি বলেন, আমরা দেশের শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাই। আমরা উন্নয়ন করে যাচ্ছি, আরও উন্নয়ন করতে চাই। এ বিষয়গুলো মানুষের মাঝে তুলে ধরতে হবে। পাশাপাশি গত তিনমাস ধরে বিএনপি-জামায়াত যে সহিংসতা চালিয়েছে, তাও মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সিটি করপোরেশনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এ নির্বাচনে মানুষ যাতে শান্তির পক্ষে আমাদের ভোট দেয়, সেই আহ্বান জানাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ নির্বাচনে হেরে যাওয়া আমাদের জন্য ঠিক হবে না। নির্বাচনে আমাদের জিততেই হবে।
বৈঠক সূত্র আরও জানায়, সভায় যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকরে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি নিয়েও কথা হয়।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা বলেন, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। এখন দ্রুতই ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে। এটি বিলম্ব হওয়া ঠিক হচ্ছে না।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবকিছু আইনি প্রক্রিয়ায় এগুচ্ছে। প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। আমাদের এখানে কিছু বলার নেই।
সভায় বক্তব্য রাখেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচটি ইমাম, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সুলতানা শফি, কে এম শফিউল্লাসহ আরও অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৫
এসকে/আরএইচ/এসএস