ঢাকা: অবরোধ ২০ দল ডেকেছিল বলে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, সে অবরোধ এখন কার্যকর নয়।
তিনি বলেন, অবরোধ আমি ডাকিনি, ডেকেছিল ২০ দল।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক বিষয়ে দেশের ভেতরে নিজেদের মধ্যে প্রকাশ্যে সমঝোতা হতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে এ সমঝোতা হতে হবে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড যা কিছু সব প্রকাশ্যে করতে হবে।
বিদেশিরা কেন আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে বলেও প্রশ্ন তোলেন খালেদা।
রোববার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ২টায় গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন খালেদা জিয়া। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়েনের দাবি জানান।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা আন্দোলন করছি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে। সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন করতে হলে নিরপেক্ষ সরকার দরকার। এজন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি সমঝোতার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ, সরকারের আজ্ঞাবহ। তারপরও আমরা এ কমিশনের অধীনে সব উপজেলা ও সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। অতীতের সবগুলো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচিতও হয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায়ই এবারের সিটি করপোরেশনেও আমরা প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
আগের মতোই নির্বাচন কমিশন এখনও নিরপেক্ষ নয় বলে অভিযোগ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচিত হয়েছিলাম বলেই কমিশন নিরপেক্ষ হয়ে গেলো, তেমনটি নয়। আমরা এখনও আশঙ্কা করছি, সরকারের আজ্ঞাবহ এ কমিশনের অধীনে এবারের সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তাই শেষবারের মতো সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।
নির্বাচনে ভোট কারচুপি করা হলে কি করবেন- এ প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, তখন আমরা বসে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি দেবো।
তিনি নিজে গাড়িবহর নিয়ে সিটি নির্বাচনের প্রচারণা চালাননি দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, আমার নিজের গাড়ি, মহিলাদের গাড়ি এবং নিরাপত্তাকর্মীদের গাড়ি ছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় তাকে ইসি চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে- সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, আর আপনাদের সাংবাদিকদের গাড়ি ছিল। তাহলে গাড়িবহর হলো কি করে?
বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই প্রথম প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন শুরু করেছেন। তাদের প্রার্থীরা অনবরত আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন। কিন্তু ইসি সেগুলো দেখছে না। সেখানে তারা নীরব রয়েছে, পক্ষপাতিত্ব করছে।
নির্বাচন কমিশনের এ ভূমিকাই প্রমাণ করে, তারা নিরপেক্ষ নয়, সরকারের আজ্ঞাবহ ও ঠুঁটো জগন্নাথ বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, ‘আদর্শ ঢাকা আন্দোলন’- এর আহবায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদসহ ২০ দলের নেতারা।
লিখিত বক্তব্যের মতোই প্রশ্নোত্তর পর্বেও হরতাল-অবরোধ চলাকালে পেট্রোল বোমা হামলা ও মানুষকে পুড়িয়ে আহত-নিহত করার সঙ্গে সরকার জড়িত বলে অভিযোগ করেন খালেদা। তিনি বলেন, মানুষ পুড়িয়ে হত্যার সঙ্গে আমরা জড়িত নই। আওয়ামী লীগের লোকজন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বোমা মেরে আমাদের ওপর দোষ চাপিয়েছে, মামলা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপিরাই এজন্য দায়ী বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জনগণ সিটি নির্বাচনে নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে আপনাদের পক্ষ নেবে। আপনাদের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নীরব প্রতিশোধ নেবে- এ আশাবাদের কারণ কি?- প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি, আওয়ামী লীগ মানুষ হত্যা করছে, খুন-গুম-হামলা-মামলা চালাচ্ছে। এজন্যই জনগণ তাদের ভোট দেবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৫
এসকেএস/এএসআর
** এবার দম্ভ ত্যাগ করুন
** ‘সিটি নির্বাচন সরকারের টেস্ট কেস’
** কাঁদলেন খালেদাও
** ‘নষ্ট রাজনীতিতে চ্যাম্পিয়ন আ’লীগ’
** ‘হাসিনার কান্নাকে মানুষ অভিনয় হিসেবে নিয়েছে’
** হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দুষলেন খালেদা
** ‘গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে’