ঢাকা: সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে নির্বাচন কমিশন শুধু কারণ দর্শানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল বলে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইডব্লিউজি) পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
রোববার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে ভিআইপি লাউঞ্জে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনপূর্ব প্রচারণা পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে প্রার্থীতা বাতিল করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কমিশন শুধু কারণ দর্শানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল ।
নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তরে ৯টি, দক্ষিণে ১৪, চট্টগ্রামে ১০টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে । এসব কোর্ট সামান্য অর্থদণ্ড ও সর্তকতা নোটিশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল ।
সেনা মোতায়েন নিয়ে নির্বাচন কমিশন অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে । নির্বাচনের দিন সেনা ব্যারাকে, না ভোট কেন্দ্রে টহল দেবে এ নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ও ভোট দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে । এ সংশয় নির্বাচনের দিন সহিংসতা বাড়িয়ে দিয়ে ভোটার উপস্থিতি কমিয়ে আনতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রচারণায় রাজনৈতিক দলের নাম, নেতার নাম, ছবি ব্যবহার করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থীরা ১৭ ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘিত করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে উঠে এসেছে পর্যবেক্ষণে ।
এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থীরা ৮ ও চট্টগ্রামে ৪ ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন । একই সাথে অনেক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের দ্বারা মিছিলে রাজনৈতিক স্লোগান দিতেও দেখা গেছে।
দেয়াল, যানবাহন, বিদ্যুতের খুঁটি, ছাদের উপরিভাগ, সড়ক বিভাজনকারী দেয়ালে পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ওসব স্থানে ব্যাপক সংখ্যক মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার, স্টিকার দেখা গেছে।
এছাড়া দুপুর ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাইক্রোফোন, লাউডস্পিকার ব্যবহারের বিধি থাকলেও এ সময়ের পরেও তা ব্যবহার করা হয়েছে।
ইডব্লিউজি’র পর্যবেক্ষণ অনুসারে, তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের ৮৪টি জনসভার আয়োজন করেছে । এরমধ্যে ৪৪টি মেয়র ও ৪০টি কাউন্সিলর প্রার্থীরা আয়োজন করেছেন ।
পর্যবেক্ষদের কাছে অনেক প্রার্থী হয়রানি, গ্রেফতার, প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন । একই সাথে অন্যান্য প্রার্থীদের তুলনায় একটি বিশেষ রাজনৈতিকদল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার সামগ্রী কম দেখা গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের ড. আবদুল আলীম বলেন, আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছি ।
ইডব্লিউজি’র স্ট্রিয়ারিং কমিটির সদস্য এ এইচ এম নোমান বলেন, সার্বিকভাবে নির্বাচনে সন্ত্রাস, সংঘাত অনেক কম । তবে আনন্দের বিষয় হচ্ছে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইডব্লিউজি’র তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৬৭ জন পর্যবেক্ষকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে । এরমধ্যে ঢাকা উত্তরে ১৮ জন, দক্ষিণে ২৮ জন ও চট্টগ্রাম সিটিতে ২১ জন কাজ করছে ।
৫৭ জন পর্যবেক্ষক ৭-২৩ এপ্রিল প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইডব্লিউজি’র পরিচালক ড. মো. আব্দুল আলীম, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য তালিয়া রেহমান, ইমাম হাছানাত উপস্থিত ছিলেন ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৫
আরইউ/এজেডকে/কেজেড