ঢাকা: মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ভোট। আর তাই নির্বাচনের আগের দিন সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে নির্বাচনের নিরাপত্তা বিষয়ে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত। ভোট গণনা ও কেন্দ্রে কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা শেষ হওয়ার পরও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।
এজন্য সোমবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র ও আশেপাশের এলাকা থাকছে ব্যাপক নিরাপত্তার আওতায়।
ইতোমধ্যেই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ১ হাজার ৯৮২টি ভোটকেন্দ্রের প্রায় সকল কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছেন বাহিনীগুলোর সদস্যরা।
সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান দেখা গেছে।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের রামপুরা থানার বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রটির আশপাশে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, আনসারের সদস্য অবস্থান নিয়ে আছেন। ভোটকেন্দ্রের প্রয়োজনীয় উপকরণাদিও চলে এসেছে এখানে। রাস্তার দু’ধারে পুলিশ অবস্থান নিয়ে মোটরসাইকেলের বিধি-নিষেধগুলো আরোহীদের জানাচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যান্য সন্দেহজনক যানবাহনও তল্লাশি করছেন।
কেন্দ্র এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী রামপুরা থানার অপারেশন অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যেকোনো সময়ের নির্বাচনের চেয়ে এবারের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী নিরাপত্তা বেশি।
তিনি বলেন, ভয়-ভীতির উর্ধ্বে থেকে জনগণ যেন স্বত:স্ফুর্তভাবে ভোট দিতে পারেন তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, রামপুরা থানা এলাকার মোট ৭৪টি ভোটকেন্দ্রের সবগুলোই এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই বলেও জানান থানার দায়িত্বশীল এই কর্মকর্তা।
রমনা থানার মগবাজারের ইস্পাহানি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র্রেও একই অবস্থা দেখা যায়। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা পুরো কেন্দ্রের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আছেন।
কেন্দ্র দেখতে আসা রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রসহ পুরো এলাকার নিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। কেন্দ্রে যেন কোনো নিরাপত্তাজনিত সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে আমরা সজাগ।
ইতোমধ্যে থানা এলাকার ৮০টি কেন্দ্রের সবগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে আছেন।
গুলশান থানার শাহজাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায় সেখানেও নির্বাচনের সকল উপকরণাদি পৌঁছে গেছে। কর্মকর্তারাও তারা তাদের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সকাল থেকেই কেন্দ্রের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছি। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা ছাড়াও টহল পুলিশও বার বার পরিদর্শন করে যাচ্ছেন।
একই থানার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কেন্দ্র, কাঁলাচাদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সশস্ত্র অবস্থান দেখা গেছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বাংলানিউজকে বলেন, দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রতিটি কেন্দ্রেই পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।
এদিকে গত শনিবার (২৫ এপ্রিল) ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচনে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার কথা জানান।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে ১২ জনসহ মোট ২২ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ ছাড়া কেন্দ্রগুলোতে ১০ জন পুলিশসহ মোট ২০ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। রিজার্ভ ফোর্স থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির পৃথক টহল টিম থাকবে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের দিন কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে রাজধানী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
আইএ/এএসআর