ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

রাজনীতি

সিটি নির্বাচন

রাত পোহালেই ভোট

ইকরাম-উদ দৌলা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
রাত পোহালেই ভোট

ঢাকা: তিন সিটি নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রসহ সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটের তৎপরতা।



মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে।

ইতোমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারাও পৌঁছে গেছেন কেন্দ্রে কেন্দ্রে। তিন সিটি নির্বাচনে প্রায় ৫০ হাজার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। সব মিলিয়ে নির্বাচন কমিশনও ভোটগ্রহণের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। রাত পোহালেই শুরু হবে ভোটের উৎসব।

ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চললেও কেন্দ্রের চৌহদ্দীর মধ্যে ভোটার উপস্থিতি থাকলে নির্ধারিত সময়ের পরেও ভোটগ্রহণ করবেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে ভোটের জন্য নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ভোটকে কেন্দ্র করে সব ধরনের মোটরযান চলাচলেও থাকছে নিষেধাজ্ঞা।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপার, সিল, বিভিন্ন ধরনের বস্তাসহ সকল নির্বাচনী উপকরণ ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। এছাড়া নির্বাচনী উপকরণ ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কমিশনের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার দেওয়া তথ্য মতে, এবার নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৬টি ওয়ার্ডে ২৮১জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৮৯জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ১৬ জন মেয়র পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ সিটিতে ভোটার রয়েছেন ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪ জন। তারা ১ হাজার ৯৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৩ জন। এ নির্বাচনে ৮৮৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। ডিএসসিসি নির্বাচনে ৩৯০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী, ৯৭ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও ২০ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৪১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ১৮ লাখ ১৩ হাজার ৪৪৯ জন। সিটিতে মোট ৭১৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১৩ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬২ জন এবং মেয়র পদে ১২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তিন সিটি নির্বাচনে প্রায় ৬০ লাখ ভোটারের জন্য ছাপানো হয়েছে ১ কোটি ৮১ লাখ ব্যালট পেপার।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে ৮০ হাজার ফোর্স। এছাড়াও ক্যান্টনমেন্টে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত থাকবে ৩ ব্যাটালিয়ান সেনাবাহিনীর প্রায় ৩ হাজার জোয়ান।

সাধারণ ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ২২ জন ফোর্স এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে অবস্থান নেবে ২৪ জন ফোর্স। এদের মধ্যে ১২ জন ফোর্স অস্ত্রসহ প্রস্তুত থাকবেন।

এতে প্রতি ৭৬ জন ভোটারের বিপরীতে একজন করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য মাঠে থাকবেন প্রায় ৫শ’ ম্যাজিস্ট্রেট।

সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাশত করা হবে না।

গোপন পর্যবেক্ষক:

ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনে অবহেলা করছেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে মাঠে থাকবে ইসির গোপন পর্যবেক্ষক দল।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১২ জন কর্মকর্তা, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১৯ জন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এলাকায় ১৪ জন কর্মকর্তা গোপনে পরিস্থিতি ও কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করবেন।
 
পর্যবেক্ষক:

তিন সিটি নির্বাচনে দেশি-বিদেশি সংস্থার ২ হাজারের মতো পর্যবেক্ষক নির্বাচনী মাঠে থাকবে। এছাড়া ৪ হাজার সাংবাদিক নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করবেন।

মোবাইলে এসএমএস:

এদিকে মোবাইল ফোনে এসএমএস-এর মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র ও ভোটার নম্বর জানানোর ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৭ সংখ্যার:

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৭ সংখ্যার তারা মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে বড় অক্ষরে পিসি (PC) লিখে স্পেস দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরটি লিখে (16103) নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএস’এ জানা যাবে ভোটার নম্বর ও ভোট কেন্দ্রের নাম।

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৩ সংখ্যার:

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৭ সংখ্যার তারা মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে বড় অক্ষরে পিসি (PC) লিখে স্পেস দিয়ে চার ডিজিটির জন্ম সাল (ভোটার আইডি কার্ডে ব্যবহৃত জন্ম সাল) এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরটি লিখে (16103) নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএস’এ জানা যাবে ভোটার নম্বর ও ভোট কেন্দ্রের নাম।

নতুন ভোটারদের জন্য:

যারা এখনও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর পাননি তারা মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে বড় অক্ষরে পিসি (PC) লিখে স্পেস দিয়ে ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে ‘দিন-মাস-বছর’ এই ফরমেটে জন্ম তারিখ লিখে (16103) নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএস’এ জানা যাবে ভোটার নম্বর ও ভোট কেন্দ্রের নাম।

এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট (http://www.ec.org.bd, http://nidw.gov.bd) এবং হেল্প লাইন (০৩৫৯০১২৩৪৫৬) থেকে এসব তথ্য জানা যাবে।

সর্বশেষ ২০০২ সালে ২৫ এপ্রিল অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন এবং ২০১০ সালের ১৭ জুন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৫
ইইউডি/এটি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।