ঢাকা: ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার তালিকায় নাম-পরিচয়ে ব্যাপক গরমিল দেখা যাওয়ায় ভোট দিতে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভোটাররা।
একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট ও এসএমএস’র মাধ্যমে পাওয়া তথ্যেও গরমিল থাকার অভিযোগ করেছেন ভোটাররা।
ভোটের শুরুতে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডের মিরপুর আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটাররা এসব অভিযোগ করেন।
নুরুল আমিন নামে এক ভোটার বাংলানিউজকে বলেন, কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে আমার কেন্দ্র, বুথ ও কক্ষ নম্বর নেই। কিন্তু এখানে এসে দেখি, সব ওলট-পালট।
তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়ের নিচতলায় ১১৯নং কক্ষ দেওয়া থাকলেও এক ঘণ্টা ঘুরে তৃতীয় তলায় পেয়েছি। তালিকায় মায়ের নাম মিলছে না বলে ভোট দিতে পারিনি।
এস এম নুরুল আমিন নামে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি ভোট দিতে এসে তালিকায় গরমিল দেখে হতাশ। তিনি বলেন, বাইরে থেকে স্লিপ দিলেও ভেতরে দেখি, আমার ভোটার তালিকায় গরমিল।
তালিকায় নাম থাকলেও সিরিয়াল নম্বরে গরমিল দেখা যাচ্ছে। তিনবার তিনতলার সাতটি কক্ষে ১৫ বার ঘুরেও ভোট দিতে পারিনি।
মো. মজিবুর রহমান নামের একজন ভোটার বাংলানিউজকে জানান, কমিশনের ওয়েবসাইট ও কেন্দ্রের বাইরের তালিকায় নাম ও ভোটার নম্বর ঠিক আছে। কিন্তু ভেতরে এসে দেখি, নাম মিললেও ভোটার নম্বর মিলছে না। তাছাড়া কমিশনের দেওয়া কক্ষ, বুথ কিছুই মিলছে না।
জাকির হোসেন নামে এক আইনজীবী বলেন, কমিশনের ওয়েবসাইট, এসএমএস সব জায়গায় কেন্দ্র, কক্ষ, বুথ সব ঠিক থাকলেও এখানে এসে দেখি, সব গরমিল।
তিনি বলেন, প্রায় আধাঘণ্টা চেষ্টা করে কক্ষ বের করলেও মায়ের নামে মিল নেই। ভোট দিতে আসা অনেকে এভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সরেজমিনে কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মিরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৪নং ওয়ার্ডের পূর্ব সেনপাড়া পর্বতার আটটি কেন্দ্র (৪৯১-৪৯৮)। এর মধ্যে পূর্ব সেনপাড়া পর্বতার (দক্ষিণ) ছয়টি ও উত্তর দু’টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৯ হাজার সাতশ’ ৩৬ জন। পাঁচতলা ভবনের তিনতলা পর্যন্ত ভোট নেওয়ার জন্য কক্ষ তৈরি করেছে কমিশন।
কিন্তু সঠিকভাবে বুথ, কক্ষ ঠিক না করে দেওয়ায় ভোটাররা ব্যাপক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে ভোটাররা অভিযোগ করেছেন।
৪৯১নং কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার ইলিয়াছ হোসেন মুন্সী বাংলানিউজকে জানান, তালিকায় গরমিলের দায়ভার নির্বাচন কমিশনের।
তবে কমিশনের দেওয়া তালিকায় গরমিল থাকায় ভোটাররা কিছুটা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।
এ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম বাংলানিউজকে জানান, আটটি কেন্দ্র এক সঙ্গে হওয়ায় বুথ, কক্ষ পেতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে ভোটারদের।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই অভিযোগ করলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সকালে ভোট দিতে আমাকেও বেগ পেতে হয়েছে। যতো কেন্দ্রে গিয়েছি সব কেন্দ্রে একই অবস্থা।
এজন্য নির্বাচন কমিশনের অবহেলাকে দায়ি করে তিনি বলেন, তালিকায় নাম, পরিচয়, কেন্দ্র, বুথ, কক্ষ সব জায়গায় ভোগান্তি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৫
আরইউ/জেডএস/এএসআর