ঢাকা: ২৮তম সম্মেলনের সব প্রস্তুতি নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সম্মেলনের দিনও ধার্য করেছেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরপরই সংগঠনটির কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরসহ গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটে কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে যাচ্ছে নতুন নেতৃত্ব।
ছাত্রলীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রে কথা বলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে ‘পরবর্তী করণীয়’ নির্ধারণে শুক্রবার (০৮ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। তারিখও নির্ধারণ হয়ে গেছে। আগামীকালই (শুক্রবার) এটা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবো।
এদিকে শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনেই কাউন্সিলের নির্দিষ্ট দিন জানা যাচ্ছে উল্লেখ করে ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির এক শীর্ষ নেতা বাংলানিউজকে বলেন, শুধু কেন্দ্র নয়, ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটেই কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে একটু সময়ের প্রয়োজন বলে আমরা আগেভাগেই তারিখ ঘোষণা করতে যাচ্ছি।
জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে ঈদুল ফিতর। এরপরে আবার শোকের মাস আগস্ট। রীতি অনুযায়ী আগস্ট মাসে সাধারণত আওয়ামী লীগ বা এর সহযোগী কোনো সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয় না।
এ ব্যাপারে ওই নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চাইলে আগস্টেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না।
তবে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগরের দুই অংশসহ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোতে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের ঘোষণার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর পদপ্রত্যাশী অনেক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা বাংলানিউজের কাছে স্বস্তি প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগ হচ্ছে দেশের সবচেয়ে সক্রিয় ও বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সংগঠনে অনেকটা স্থবিরতা বিরাজ করছিল। আশা করছি নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংগঠনে আবার গতি ফিরে আসবে এবং যোগ্যরাই নির্বাচিত হবেন।
২০১৩ সালের জুলাই মাসে বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। দুই বছরের কমিটি আগামী জুলাইয়ে চার বছর পার করবে। এমন অবস্থায় খোদ প্রধানমন্ত্রীই সম্মেলনের তাগাদা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার ক্ষেত্রে বয়সের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২৯ বছর বয়স পার হয়ে গেলে কেউ আর নেতৃত্বে আসার সুযোগ পাবেন না। তাই আসন্ন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রত্যাশী কিন্তু বয়স প্রায় শেষের পথে এমন কয়েকজন সিনিয়র নেতার দাবি বয়সের ফাঁদে ফেলে তাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে যেন বাদ দেওয়া না হয়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালের ৯-১১ জুলাই। এ কাউন্সিলের মাধ্যমে দুই বছরের জন্য নেতৃত্বে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ (সভাপতি) এবং সিদ্দিকী নাজমুল আলম (সাধারণ সম্পাদক)।
কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সপ্তাহখানেক আগে অনুষ্ঠিত হয় সংগঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন এবং এর অল্প কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা মহানগরের দুই শাখার সম্মেলন।
এবারও সে রকমটি হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। তাই ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিতে আগেভাগেই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৪ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৫
এসইউজে/এসএ/আইএ