রাজশাহী: বিডিআর হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক ছাত্রদল সভাপতি ও বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর।
রাজশাহী কারাগারে থাকা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু রোববার(৩ মে’২০১৫) দুপুরে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জরুরি বিভাগ থেকে তাকে হৃদরোগ বিভাগে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ১২টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দীন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে(দক্ষিণ) তিনি প্রার্থী হওয়ায় গত ২০ এপ্রিল তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে থেকে নির্বাচনের প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন আশঙ্কায় কারা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহাদাৎ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে রাজশাহী কারাগারে আনার পর তাকে ৫নং সেলে রাখা হয়েছিল। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কিন্তু হাসপাতালের নেওয়ার পর সুস্থ বোধ করলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওই দিনই তাকে হাসপাতাল কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি সুস্থ থাকলেও রোববার দুপুরে বুকে ব্যথা অনুভব করেন।
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিআইজি(প্রিজন) বজলুর রশিদ বাংলানিউজকে জানান, নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় যাবজ্জীবন(৩০ বছর) সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। তার মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পিন্টুর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হবে। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারে কাছে পাঠানো হবে।
সদ্য সমাপ্ত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে কারাগারে থেকেই তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর গত ১ এপ্রিল তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় প্রথমে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরে মামলাটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তর করা হয়। ওই মামলাতে পিন্টুর বিরুদ্ধে বিডিআর সদস্যদের পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়।
পরে ২০১৩ সালের নভেম্বরে বিডিআর হত্যা মামলার রায়ে বিএনপি নেতা পিন্টু এবং আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৫২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৭১ জনকে খালাস দেয়া হয়। ২০০৯ সালের ২ জুন হাইকোর্টের গেট থেকে পিন্টুকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৮ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৫/ আপডেটেড- ১৪৩০ ঘণ্টা
এসএস/এনএস
** পিন্টুর মৃত্যুর ঘটনায় রাজপাড়া থানায় অপমৃত্যু মামলা
** নাসির উদ্দিন পিন্টুর মৃত্যুতে লেবার পার্টির শোক
** আজিমপুরে দাফন পিন্টুর