ময়মনসিংহ: ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকেই তিনি উঠে এসেছেন। প্রায় তিন যুগ যাবত বহন করছেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ।
চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন আদর্শের প্রশ্নে আপোসহীন অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। এরপর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ট্রমা অর্থোপেডিক্স অ্যান্ড রিহেবিলিটেশনে (নিটোর) অস্ত্রোপাচার শেষে নিজের স্মৃতিময় শহর ময়মনসিংহে ফেরেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এ সহ-সভাপতি।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী টানা এক মাস নিজের বাসার বিছানায় শুয়ে-বসে আর বই পড়ে সময় কাটিয়েছেন। ৫৩ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খোকা অবশেষে ফিরলেন জেলা পরিষদ কার্যালয়ে। সোমবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১১টায়।
জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রবীণ এ অভিভাবককে কাছে পেয়ে আনন্দ যেন বাঁধভাঙে দলীয় নেতাকর্মী ও জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। প্রিয় মানুষটির সান্নিধ্যে উষ্ণ আলিঙ্গন করতে তারা ছুটে আসেন ফুল হাতে।
জেলা পরিষদ প্রশাসকের ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) হুমায়ুন কবির হিমেল বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে স্যার সোমবার অফিস করেছেন। অসুস্থতার দুয়ার থেকে সুস্থ হয়ে স্যার ফিরে আসায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিক থেকে শুরু করে জেলার আপামর জনসাধারণ খুশি।
তিনি বলেন, দলীয় নেতাকর্মীরা স্যারের স্বাস্থ্যের কুশলতা জানতে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
জেলা পরিষদ প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, অফিসে ফিরেই অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা দিনভর রুটিন ওয়ার্কে ব্যস্ত ছিলেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। নিবিষ্ট মনে জেলা পরিষদের উদ্যোগে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের খোঁজ-খবর নিয়েছেন।
নিজের কর্মস্থলে অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার ফিরে আসার খবরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.কুদ্দুস, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আহাম্মদ আলী আকন্দ, কোষাধ্যক্ষ ফারুক হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক রিপন, শহর ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন আরিফ প্রমুখ।
গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের বাবা বর্ষিয়াণ রাজনীতিক অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা অসুস্থ হয়ে পড়লে ময়মনসিংহ শহর ও বিভিন্ন উপজেলার মসজিদ, মাদরাসা ও এতিমখানায় তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা ও ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটুর উদ্যোগে জেলা আওয়ামী লীগও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।
রাজনীতি ও আইনাঙ্গণে ৫০ বছর পার করা পরিচ্ছন্ন এ রাজনীতিকের জন্য ওই সময়ে হৃদয়গ্রোথিত আবেগ ছিল রাজনীতিক, পেশাজীবী থেকে শুরু করে সবারই।
‘দলের জন্য দুঃসময়ে কিংবা ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতি করেছেন অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। আমরা প্রত্যেকেই আশা করি, ভালো মনের এ মানুষটি দীর্ঘদিন সুস্থ থেকে ময়মনসিংহবাসীর জন্য আগের মতোই কাজ করে যাবেন’- বলেন জেলা পরিষদ প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক রিপন।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ.কুদ্দুস বলেন, অ্যাডভোকেট খোকা একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক। আজন্ম দলের জন্য কাজ করেছেন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, এটা আমাদের জন্য পরম আনন্দের। অতীতের মতোই তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৫
এইচএ